কুড়িগ্রামের রৌমারীতে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত
গত দুই সপ্তাহের টানা বর্ষণ ও উজানের পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকায় কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। গত পাঁচদিন ধরে রৌমারী উপজেলার সীমান্তঘেঁষা নদী জিঞ্জিরাম, ধরণী ও কালজানির পানি বৃদ্ধি পেয়ে এ বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। বেড়েছে তিস্তা, ধরলা, ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমারসহ অন্যান্য নদ-নদীর পানিও। ফলে এলাকায় বসতবাড়ির চারদিকেও জমেছে পানি। এতে ব্যাহত স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। এদিকে স্থানীয়দের মধ্যে দেখা দিয়েছে খাদ্যসংকট। তবে, এখনো ত্রাণ তৎপরতা শুরু করতে পারেনি উপজেলা প্রশাসন।
জানা গেছে, রৌমারী উপজেলার চার ইউনিয়নের প্রায় ৪০ হাজার মানুষ। উজানের পাহাড়ি ঢলের লালচে কাদা পানিতে জমির ফসল নিয়ে দুঃচিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা। চারণভূমি তলিয়ে থাকায় গবাদিপশুর খাদ্যসংকট নিয়েও বিপাকে পড়েছেন বন্যা কবলিতরা।
কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, রৌমারী উপজেলায় প্রায় ২২৩ হেক্টর জমির বিভিন্ন ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে।
রৌমারী উপজেলার শৌলমারী ইউনিয়নের কৃষক সেফাত উল্ল্যা জানান, আমার কাউন ক্ষেত, সবজি খেত পাঁচদিন ধরে পানিতে তলিয়ে আছে। এতে সব ফসল নষ্ট হয়ে যাবে।
সদর ইউনিয়নের বাওয়াইর গ্রামের ছপিয়াল হক জানান, চারদিকে বন্যার পানি থাকায় কর্মহীন হয়ে পড়েছেন তাঁরা।
যাদুরচর ইউনিয়নের পুরাতন যাদুরচর গ্রামের আমজাদ হোসেন বলেন, ‘পানিবন্দি অবস্থায় থাকলেও এখনও কোনো সহায়তা পাইনি।’
যাদুরচর ইউপি চেয়ারম্যান সরবেশ আলী বলেন, ‘তালিকা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু, সরকারিভাবে এখনো কোনো বরাদ্দ পাইনি। বরাদ্দ পেলে তা বন্যা কবলিতদের মাঝে বিতরণ করা হবে।’
অন্যদিকে, উপজেলার ২২ কিলোমিটার পাকা ও ৩৫ কিলোমিটার কাঁচাসড়ক পানিতে তলিয়ে থাকায় ভেঙে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। এ অবস্থায় নৌকা ও কলাগাছের ভেলায় যাতায়াত করছেন বন্যাকবলিতরা।
রৌমারী উপজেলা প্রকৌশলী জোবায়েত হোসেন জানান, বন্যার পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা দ্রুত মেরামত করা হবে।
বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল আলম রাসেল জানান, কিছু এলাকায় পানি কমলেও উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরির কাজ শেষ হলেই ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হবে।’