কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি
ব্রহ্মপুত্র ও ধরলার পানি কয়েকদিন ধরে বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। এতে করে দুর্ভোগে রয়েছে চর, দ্বীপচরসহ নদ-নদী অববাহিকার নিচু এলাকার অন্তত ৫০ হাজার পানিবন্দি মানুষ। এসব এলাকার কাঁচা সড়ক তলিয়ে থাকায় ভেঙে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা।
জানা যায়, চলমান বন্যায় জেলায় প্রায় ১৬ হাজার ৪০৭ হেক্টর জমির রোপা আমন ও ২৭০ হেক্টর জমির সবজি ক্ষেত, একশ হেক্টর জমির বীজতলা দীর্ঘদিন পানিতে তলিয়ে থাকায় বেশিরভাগ ফসল নষ্ট হয়ে গেছে।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের গারুহারা গ্রামের জমিলা বেগম জানান, ‘প্রায় ১০ দিন ধরে আমার বাড়ির চারিদিকে পানিতে তলিয়ে আছে। নৌকা ছাড়া বাইরে যাওয়ার উপায় নেই। ঠিকমতো বাজার সদাই করতে পারছি না। শ্যালো মেশিনে সেচ দিয়ে আমন লাগিয়েছি সে আমনও পানির নিচে থেকে নষ্ট হয়ে গেছে।’
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আইয়ুব আলী সরকার বলেন, ‘আমার ইউনিয়নের ব্রহ্মপুত্রের অববাহিকার প্রায় তিনশ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। প্রশাসন থেকে পাঁচশ প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ পাওয়া গেছে যা বিতরণ প্রক্রিয়া চলছে।’
উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বেলাল হোসেন বলেন, ‘আমার ইউনিয়নের প্রায় পাঁচশ পরিবার পানিবন্দি। ঘরের ভেতর পানি না উঠলেও চারিদিক তলিয়ে আছে। ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এভাবে পানি বৃদ্ধি পেলে ঘর-বাড়ির ভেতরে পানি ঢুকে পড়বে।’
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩৮ সেন্টিমিটার ও ধরলার পানি সেতু পয়েন্টে বিপৎসীমার ২৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ধরলার পানি কিছুটা হ্রাস পেলেও ব্রহ্মপুত্রের পানি আরও কিছুটা বাড়তে পারে।’
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, ‘বন্যাকবলিতদের জন্য ২৮০ মেট্রিক টন চাল ও সাড়ে ১১ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।’