কোভিড ও রোহিঙ্গা বিষয়ে সহায়তায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রশংসা বাংলাদেশের
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম ওয়াশিংটন ডিসিতে স্টেট ডিপার্টমেন্টে মার্কিন ডেপুটি সেক্রেটারি অব স্টেট ওয়েন্ডি আর শেরম্যানের সঙ্গে এক বৈঠক করেন। বৈঠকে তারা বিভিন্ন দ্বিপক্ষীয় এবং অভিন্ন বৈশ্বিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
প্রতিমন্ত্রী মহামারি মোকাবিলায় প্রায় ৮৮ মিলিয়ন কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন ডোজ সরবরাহ করে বাংলাদেশে অভূতপূর্ব সহায়তা দেওয়ার জন্য মার্কিন সরকারকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। তিনি রোহিঙ্গাদের প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মানবিক সহায়তা এবং মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রচেষ্টার আন্তরিক প্রশংসা করেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ শনিবার এ তথ্য জানানো হয়েছে।
শাহরিয়ার আলম এলডিসি সম্পর্কিত বিষয়ে ডব্লিউটিও-তে মার্কিন সহায়তা কামনা করেছেন যাতে করে বাংলাদেশের মতো দেশগুলো একটি সুষ্ঠু এবং টেকসই এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন অর্জন করতে পারে। তিনি জলবায়ু পরিবর্তন এবং অভিবাসন ইস্যুতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারের ইচ্ছা ব্যক্ত করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি আসন্ন ২৭তম জাতিসংঘ জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলনে জলবায়ু সংশ্লিষ্ট ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে একটি কর্মমুখী আলোচনার প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
মার্কিন ডেপুটি সেক্রেটারি তার বক্তব্যের শুরুতে সম্প্রতি মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে তিন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বিশ্ব শান্তিরক্ষায় বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের অবদানের ভুয়সী প্রশংসা করে তিনি বাংলাদেশের উচ্চ কোভিড-১৯ টিকার হার এবং মহামারি মোকাবিলায় ও নিয়ন্ত্রণে সরকার গৃহীত পদক্ষেপেরও প্রশংসা করেন। ওয়েন্ডি আর শেরম্যান জলবায়ু পরিবর্তনে বাংলাদেশের নেতৃত্বের প্রশংসা করেন এবং COP27-এর আগে ‘গ্লোবাল মিথেন প্লেজ’ এ যোগ দিতে বাংলাদেশের প্রতি আহ্বান জানান।
র্যাব ও এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মার্কিন সরকারের প্রতি যত দ্রুত সম্ভব এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার আহ্বান জানান। ডেপুটি সেক্রেটারি শেরম্যান সন্ত্রাসবাদ ও সহিংস চরমপন্থার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের সাথে অব্যাহত সহযোগিতার কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। বাংলাদেশের শ্রম খাতে অগ্রগতির কথা উল্লেখ করে ডেপুটি সেক্রেটারি শেরম্যান দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বাড়াতে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা জোরদারের ওপর জোর দেন। ইউক্রেন যুদ্ধ, খাদ্য ও জ্বালানি নিরাপত্তা এবং বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিষয়গুলোও আলোচনায় স্থান পায়।
প্রতিমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি রাশেদ চৌধুরীকে বাংলাদেশে অবিলম্বে ফেরত পাঠানোর জন্য মার্কিন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, বিষয়টি বাংলাদেশের জনগণ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বহিঃসমর্পণ চুক্তি সম্পাদনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এই বৈঠকে সন্ত্রাস দমনে বাংলাদেশ-মার্কিন সহযোগিতা, র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন, ইউক্রেন যুদ্ধ এবং বঙ্গবন্ধুর খুনি রাশেদ চৌধুরীকে ফেরত পাঠানোসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।