কোস্টগার্ডকে সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
কোস্টগার্ড সদস্যদের সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ভবিষ্যতে আরও নতুন নতুন দায়িত্ব পালনে সক্ষম করে তুলতে আমরা কোস্টগার্ডকে একটি আধুনিক ও যুগপোযোগী বাহিনী হিসেবে গড়ার লক্ষ্যে কাজ করছি।
বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের ২৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও পদক প্রদান অনুষ্ঠানে আজ মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড সদর দপ্তরে আয়োজিত মূল অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হন তিনি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আপনারা সব সময় দেশপ্রেম, সততা ও ঈমানের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে কোস্টগার্ডের সুনাম ও মর্যাদা সমুন্নত রাখবেন। দেশের সমুদ্র ও উপকূলীয় এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করবেন বলে আশা করি।’
রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, ‘বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের নিজস্ব জনবল নিয়োগ কার্যক্রম এবং ফোর্স পুনর্গঠনের মাধ্যমে এ বাহিনীর সক্ষমতা অর্জনে আমাদের সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ব্লু-ইকোনমি ও গভীর সমুদ্রে নিরাপত্তা প্রদানের জন্য এ বাহিনীর রূপকল্প-২০৩০ ও ২০৪১ অনুযায়ী জাহাজ, সরঞ্জামাদি ও জনবল আরও বৃদ্ধির পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের জাহাজনির্মাণ শিল্পকে বিকশিত করার জন্য তাঁর সরকারের দক্ষিণাঞ্চলে আরও একাটি শিপইয়ার্ড নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।
সরকার প্রধান বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জ ড্রাইডক এবং চট্টগ্রাম ড্রাইডক, সেটাও আমরা নৌবাহিনীর হাতে সমর্পণ করেছি। ভবিষ্যতে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে আরও একটি শিপইয়ার্ড নির্মাণের পরিকল্পনা আমাদের আছে। আশা করছি, আমরা তা করতে পারবো। ইতোমধ্যে আমরা জায়গা পছন্দ করে রেখেছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের পরামর্শে অলাভজনক উল্লেখ করে খুলনা শিপইয়ার্ড ও বিএনপি সরকারের আমলে বন্ধ করে দেওয়ার প্রক্রিয়া হয়েছিল। কিন্তু আমরা সরকারে আসার পর এই শিপইয়ার্ড নৌবাহিনীর হাতে অর্পণ করি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডকে আধুনিক ও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে খুব শিগগির এ বাহিনীতে যুক্ত হতে যাচ্ছে উন্নত প্রযুক্তির জাহাজ, হোভ্যারক্র্যাফট ও দ্রুত গতি সম্পন্ন বোট। এ ছাড়া গভীর সমুদ্রে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের যোগাযোগ ব্যবস্থায় যুগান্তকারী পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১-এর সঙ্গে ডিজিটাল সংযোগ স্থাপনেরও উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে।’
সরকার প্রধান বলেন, ‘গত ১৩ বছরে কোস্ট গার্ডের জন্য বিভিন্ন আকারের ৭৭টি জাহাজ ও জলযান নির্মাণ ও সংযোজন করা হয়েছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ নৌবাহিনী পরিচালিত নারায়ণগঞ্জ ডকইয়ার্ড এবং খুলনা শিপইয়ার্ডে কোস্ট গার্ডের জন্য দুটি ইনশোর প্যাট্রোল ভেসেল, একটি ফ্লোটিং ক্রেন, দুটি টাগ বোট এবং ১৬টি বোট তৈরি করা হয়েছে। কোস্ট গার্ডের ভেসেল ও জাহাজসমূহ নির্মাণ, মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণর জন্য গজারিয়ায় একটি ডকইয়ার্ডও নির্মাণ করা হচ্ছে। নিজস্ব ইয়ার্ডে জাহাজ তৈরির সক্ষমতা আমাদের আত্মবিশ্বাসকে আরও সুদৃঢ় করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’
বাংলাদেশ পরমুখী থাকবে না মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমাদের নদীমাতৃক বাংলাদেশের বিশাল সমুদ্রসীমা রয়েছে, তাই আমরা পরমুখী হয়ে থাকবো না। আমরা চাই, সমুদ্রে আমাদের যে সম্পদ আছে, সেই সম্পদ আমাদের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে কাজে লাগুক।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের এ অঞ্চল, বিশেষ করে বঙ্গোপসাগর আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেখান থেকে অবশ্যই চিন্তা করতে হবে। আমাদের এ অঞ্চলের সব নিরাপত্তা রক্ষা করা প্রয়োজন, সেজন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়াও দরকার। সেটা আমরা করে যাচ্ছি।’