ক্যাম্প কমান্ডারদের র্যাব মহাপরিচালকের কড়া হুঁশিয়ারি
ক্যাম্প কমান্ডারদের প্রতি কড়া হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন র্যাব মহাপরিচালক (ডিজি) এম খুরশীদ হোসেন। অনেক ক্যাম্প কমান্ডার অসহায় সাধারণ মানুষের কথা শোনেন না বলে অভিযোগ আসছে উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, ‘আমি পুনরায় এমন অভিযোগ শুনতে চাই না।’
আজ সোমবার (২০ জানুয়ারি) রাজধানীর র্যাব সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত র্যাব মেমোরিয়াল ডে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই হুঁশিয়ারি দেন তিনি। বলেন, ‘যারা র্যাবের কাছে সহায়তা চাইবেন, তাদের সঙ্গে অবশ্যই ক্যাম্প কমান্ডার কথা বলবেন। আমি অভিযোগ পাচ্ছি—অনেক ক্যাম্প কমান্ডার অসহায় সাধারণ মানুষের কথা শোনেন না। আমি পুনরায় এমন অভিযোগ শুনতে চাই না।’
‘সন্তান বা স্বামী হারানোর যে শূন্যতা, তা কোনো কিছুতেই পূরণ হওয়ার নয়’ জানিয়ে এম খুরশীদ হোসেন বলেন, ‘র্যাবে কর্মরত অবস্থায় যাঁরা শহীদ হয়েছেন, সেসব পরিবারকে আমরা প্রতিবছর আমন্ত্রণ জানাই। আমরা তাদের আর্থিক সহায়তা, উপহারসামগ্রী প্রদান করি। তবে, আজ যে সন্তান পিতা হারা হয়েছেন, যে স্ত্রী স্বামী হারা হয়েছেন, আমরা সেই শুন্যতা কোনো অবস্থাতে অর্থ দিয়ে বা পুরস্কার দিয়ে পূরণ করতে পারব না। যেসব সদস্য দেশের জন্য শাহাদাত বরণ করেছেন, তারা আমাদের গর্ব। আমরা জানি, আল্লাহর কাছে শহীদের মর্যাদা অনেক বেশি। আমার পক্ষ থেকে ডিরেক্টর বা সিওদের অনুরোধ থাকবে কোনো শহীদ পরিবার আপনাদের কাছে উপকার না পেলেও অন্তত আন্তরিকতার কমতি যেন না থাকে; এটা নিশ্চিত করতে হবে।’
মহাপরিচালক এম খুরশীদ বলেন, ‘আজকে আমরা যারা জীবিত রয়েছি, তারা কে কোন অবস্থায় মারা যাব, কেউ জানি না। কিন্তু, শহীদ পরিবারের ক্ষতিগ্রস্ত সদস্যদের অনুভূতি যেন বুঝতে পারি। তাদের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেব।’
এম খুরশীদ হোসেন বলেন, ‘শহীদ পরিবারের সন্তাদের প্রতি আমাদের দায়িত্ব থাকবে, আমাদের মাধ্যমে যদি কর্মসংস্থান হয় সেটা অবশ্যই করব। শহীদদের অনেকের সহধর্মিণী রয়েছে, তাদেরও যদি কর্মের ব্যবস্থা করা যায় সেটাও আমরা সবাই চেষ্টা করব। চাকরি জীবনে আমরা যতটুকু মানুষের জন্য উপকার করে যেতে পারি, সেটাই কিন্তু আত্মতৃপ্তি। যখন অবসরে চলে যাবো তখন এ সুযোগ থাকবে না।’
র্যাবের কর্মকর্তাদের প্রতি কড়া বার্তা দিয়ে এলিট ফোর্স প্রধান এম খুরশীদ বলেন, ‘র্যাবের এডিজি, অধিনায়ক বা কোনো ক্যাম্পে গিয়ে আমাদের শহীদ পরিবারের সদস্যদের এমন অনুভূতি না জাগে যে; আজ আমার বাবা বা স্বামী বেঁচে নেই বলে র্যাবের কাছে এসে সহায়তা পেলাম না। সবাইকে বলব শহীদ পরিবারের প্রতি আমাদের আন্তরিকতার কমতি থাকবে না। তারা যেন মনে কষ্ট না পায়। কোনো ব্যাটালিয়নে গিয়ে যদি কেউ উপকার না পান কষ্ট করে ঢাকায় চলে আসবেন, আমরা তাদের সহায়তার চেষ্টা করব। আর শহীদ পরিবারের সদস্য যারা আমাদের কাছে দাবি-দাওয়া রেখেছেন তাদের বিষয়ে আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।’
এম খুরশীদ হোসেন বলেন, ‘দরবারের প্রথম দিনে প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, আমরা দেশের মানুষের জন্য কাজ করি। আমাদের অন্য কোনো কিছু চিন্তা করলে চলবে না। ভয়ের কোনো কাজ নেই। আমাদের একটাই আস্থা আমরা এদেশের সন্তান, এদেশের জন্য কাজ করি। সবার মধ্যে একটা আস্থা তৈরি হয়েছে—র্যাব মানুষের ভরসা, নিরাপত্তা ও ভরসার প্রতীক। আমি চাই, আমাদের সকল সদস্য মানুষের মধ্যে ভরসা-আস্থা আরও বাড়াতে কাজ করবে।’
বাহিনীর সকল সদস্যদের উদ্দেশে এম খুরশীদ হোসেন আরও বলেন, ‘আমরা শাসক না, সেবক হতে চাই। আমি চাই যারা অসহায় মানুষ, বিপদগ্রস্ত মানুষ আমাদের আন্তরিকতা, ক্ষমতা দিয়ে তাদের সহায়তা করব। যতদিন চাকরি আছে মানুষকে সহায়তা করে যাবেন।’