ক্যাসিনো সেলিমের মুক্তি চাইলেন রুশ স্ত্রী
ক্যাসিনোকাণ্ডের অন্যতম হোতা সেলিম প্রধানের মুক্তি চেয়েছেন তাঁর রুশ স্ত্রী আনা। আজ বুধবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬-এর বিচারক আসাদ মো. আসিফুজ্জামানের আদালতে তিনি হাজির হয়ে বিচারকের অনুমতি নিয়ে সেলিম প্রধানের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় আনা গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি তিন দিন আগে এসেছি, এখন দেশেই থাকব।’
গণমাধ্যমকে সেলিমের রুশ স্ত্রী আনা বলেন,’ আমাদের সন্তান আছে। আমার স্বামীর বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করা হয়েছে, তা সত্য নয়। আমি আমার স্বামীর মুক্তি চাই। আইনের মধ্যে থেকে ন্যায়বিচার চাই।’
এদিকে, আজ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের করা মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ধার্য ছিল। এ জন্য সেলিম প্রধানকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর তার উপস্থিতিতে রেজাউল করিম নামের একজন ব্যাংকার এই মামলায় আদালতে সাক্ষ্য দেন। এ নিয়ে মোট ৩৯ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। এর আগে গত বছরের ৩১ অক্টোবর আদালত সেলিমের উপস্থিতিতে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন।
মামলার বিররণী থেকে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ২৭ অক্টোবর দুদক উপপরিচালক (গুলশান) আনোয়ার প্রধান বাদী হয়ে সেলিম প্রধানের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এই মামলায় তার বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে ১২ কোটি ২৭ লাখ ৯৫ হাজার ৭৫৪ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ করা হয়েছিল। এই উপপরিচালকই মামলাটি তদন্ত করে শেষ পর্যন্ত তার নামে মোট ৫৭ কোটির বেশি টাকার অবৈধ সম্পদের প্রমাণ পেয়েছেন। এর আগে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান চলাকালে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সেলিম প্রধান র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হন।
মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, দুর্নীতির মাধ্যমে ও ক্যাসিনো খেলে সেলিম প্রধান মোট ৫৭ কোটি ৪১ লাখ ৪৮ হাজার টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন। এর মধ্যে স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ৩৫ কোটি ৪১ লাখ ৯৭ হাজার টাকার। ক্যাসিনো খেলে অর্জিত ২১ কোটি ৯৯ লাখ টাকা পাচার করেছেন থাইল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্রে। সেলিম জাপান-বাংলাদেশ সিকিউরিটি প্রিন্টিং পেপারসের চেয়ারম্যান। এই কম্পানিতে তার ৪০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। ৬৯ হাজার শেয়ারের বিপরীতে এখানে বিনিয়োগ দেখানো হয়েছে ৬৯ লাখ টাকা। তবে সেলিম প্রধানের নামে শেয়ার মানি ডিপোজিট পাওয়া গেছে ২৩ কোটি ৫৫ লাখ ৮৪ হাজার ৬৫০ টাকা। এই টাকা তিনি অর্জন করেছেন অবৈধভাবে। প্রিন্টিং পেপারস কম্পানি ২০১০ সালে মুনাফা করে ২৯ লাখ ৩৩ হাজার ৮৫৩ টাকা।
২০১১ সালে মুনাফা করে এক কোটি ৪৬ লাখ ২১ হাজার ৭২ টাকা। এখান থেকে ২০১১-১২ অর্থবছরে আট কোটি টাকা ঋণ নেন বলে সেলিম প্রধান তার ব্যক্তিগত আয়কর নথিতে উল্লেখ করেছেন। তবে, এই কম্পানি থেকে কিভাবে ঋণ গ্রহণ করেছেন এসংক্রান্ত কোনো রেকর্ডপত্র নেই তার কাছে।