খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন পেয়েছি : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন হাতে পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্বারষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
আজ বুধবার সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়ার ভাই শামীম এস্কান্দার আবেদনটি গতকাল মঙ্গলবার আমার হাতে দিয়েছেন। এতে শর্ত শিথিল করারও আবেদন করা হয়েছে। আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সিদ্ধান্ত জানাব। এ ব্যাপারে আইন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত জানাবে সরকার।’
সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আবেদনে সাজা মওকুফ করে উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।’
এ সময় এক প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, ‘মাত্র গতকাল চিঠি পেয়েছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবতার জননী। তিনি বিষয়টি ইতিবাচকভাবে নেবেন বলে আমরা আশা করছি।’
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিশেষ আদালতের রায়ে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড নিয়ে কারাবন্দি হন খালেদা জিয়া। তারপর নাজিমউদ্দিন রোডের সাবেক কেন্দ্রীয় কারাগারে শুরু হয় তাঁর কারাজীবন। একই বছরের ৩০ অক্টোবর রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ মামলায় খালেদা জিয়ার সাজা পাঁচ বছর বাড়িয়ে ১০ বছরের আদেশ দেন বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বেঞ্চ।
অন্যদিকে, ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেন আদালত। রাজধানীর নাজিমউদ্দিন রোডের পুরানো কেন্দ্রীয় কারাগারে অবস্থিত ঢাকার ৫ নম্বর অস্থায়ী বিশেষ জজ ড. মো. আখতারুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ে সাত বছরের কারাদণ্ড ছাড়াও খালেদা জিয়াকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ডাদেশ দেন আদালত।
নাজিমউদ্দিন রোডের পুরানো কেন্দ্রীয় কারাগারে এক বছরের বেশি সময় বন্দিজীবন কাটানোর পর চিকিৎসার জন্য তাঁকে নিয়ে আসা হয় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) কেবিন ব্লকের প্রিজন সেলে।
গত বছর সারা বিশ্বে মহামারি করোনা ছড়িয়ে পড়লে শর্তসাপেক্ষে সরকার প্রধানের নির্বাহী আদেশে জামিন পান খালেদা জিয়া। প্রায় ২৫ মাস (কারাগার ও বিএসএমএমইউ'র প্রিজন সেল) কারাভোগের পর তিনি ২০২০ সালের ২৫ মার্চ মুক্ত হন। বিএসএমএমইউ প্রিজন সেল থেকে মুক্তির পর গুলশানে নিজের ভাড়া বসায় অবস্থান করছেন সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী।
মূলত খালেদা জিয়ার পরিবারের পক্ষে তাঁর ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দারের আবেদন আমলে নিয়ে শর্তসাপেক্ষে জামিন দেওয়া হয়। প্রথমে ছয় মাসের জামিন দিলেও পরে তা আরো ছয় মাস বাড়ানো হয়। সেই থেকে ১১ মাসের বেশি সময় ধরে নিজ বাসায় অবস্থান করছেন খালেদা জিয়া।
করোনা মহামারির মধ্যে গত বছরের ২৫ মার্চ সাজা স্থগিত করে সাময়িক মুক্তি দেওয়া হয় সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে। পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পরে সেপ্টেম্বরে সাময়িক এ মুক্তির মেয়াদ ছয় মাস বাড়ানো হয়। চলতি মাসের ২৫ তারিখ শেষ হচ্ছে সেই মেয়াদও।