গণসমাবেশে বিএনপির সাত সংসদ সদস্যের পদত্যাগের ঘোষণা
রাজধানীতে বিএনপির গণসমাবেশে দলটির নেতা ও সংসদ সদস্য গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ বলেছেন, আমরা যে সাতজন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছি, তারা সবাই পদত্যাগের ঘোষণা দিলাম।
রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠে আজ শনিবার জনসভায় তিনি এ ঘোষণা দিয়ে বলেন, সাড়ে তিন বছর আমরা এই সংসদে ছিলাম। এই সংসদে জনগণের কথা আওয়ামী লীগ বলেনি। আওয়ামী লীগ এই সংসদকে বানিয়েছে সংসদ নেতার বন্দনার বাক্স। আমি একটি সিদ্ধান্তের ঘোষণা দিতে চাই। আমরা সংসদে সাত জন আছি; গতকাল স্ট্যান্ডিং কমিটিতে তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যারা সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছি, তারা সংসদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিলাম।
এদিকে, বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় জনসমাবেশে সকল বাধা ও প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে লাখো জনতার সমাগম ঘটেছে গোলাপবাগ মাঠসহ আশেপাশের এলাকায়।
জনতার ঢেউ গিয়ে আছড়ে পড়েছে রাজধানীর প্রবেশপথ সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী, মানিকনগর, শাহজাহানপুর, কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন, গোপীবাগ, টিকাটুলি, মতিঝিলসহ প্রধান প্রধান সড়কগুলোতে। জনতার স্রোতকে আটকে রাখতে পারেনি কোনো বাধাই।
আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া নিঃশর্ত মুক্তিসহ ৯ দফা দাবিতে এ বিভাগীয় সমাবেশের আয়োজন করেছে বিএনপি।
বিএনপির এ গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে গত কয়েকদিন ছিল ঘটনাবহুল। শর্ত ও পাল্টা শর্তের পর শেষ পর্যন্ত গতকাল শুক্রবার দুপুরে গোলাপবাগ মাঠে গণসমাবেশের অনুমতি দেয় ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। অনুমতি পাওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে গতকাল শুক্রবার বিকেলে গোলাপবাগ মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়।
আজ শনিবার সকাল আটটার দিকে গোলাপবাগ মাঠে গিয়ে দেখা যায়, তিল ধারণের ঠাঁই নেই মাঠে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা ছড়িয়ে পড়তে থাকে আশেপাশের এলাকায়।
সমাবেশে যোগ দিতে ভোর থেকেই মিছিল নিয়ে ঢাকার আশেপাশের জেলা ও উপজেলা থেকে আসতে থাকেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। সকাল ৭টার দিকে যাত্রাবাড়ী মোড়ে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও র্যাব সদস্য মোতায়েন রয়েছে। কিছুক্ষণের মধ্যে ডেমরা, ধোলাইপাড় ও চিটাগাং রোড থেকে বড় বড় মিছিল আসতে থাকে। মুহূর্তের মধ্যেই যাত্রাবাড়ী মোড় বিএনপির নেতাকর্মীদের পদভারে মুখরিত হয়ে ওঠে। এখানে সরকারের পদত্যাগ দাবি ও খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে স্লোগানে স্লোগানে প্রকম্পিত হয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই পুলিশ ও র্যাব সদস্যরা যাত্রাবাড়ী মোড় ছেড়ে মহল্লার অলিগলিতে গিয়ে আশ্রয় নেয়।
সকাল ১০টার দিকে দেখা যায়, সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে প্রধান সড়ক ধরে মানিকনগর হয়ে কমলাপুর স্টেডিয়ামের সামনে পর্যন্ত লোকে লোকারণ্য। এরপর রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে যেসব মিছিল এসেছে সেগুলো আর সামনে এগুতে না পেরে সড়কেই অবস্থান নেয়। নেতাকর্মীদের স্রোত দেখা যায় কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন, মতিঝিল, গোপীবাগ ও টিকাটুলিসহ আশেপাশের এলাকায়।