গত মাসে সড়কে প্রাণ হারিয়েছে ৫২৪ জন, আহত ৮২১
সম্প্রতি দেশে বেড়েছে সড়ক দুর্ঘটনা। গত মাসে (জুন) সারা দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৪৬৭টি। এসব দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে ৫২৪ জন। এবং আহত হয়েছে ৮২১ জন।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে আজ সোমবার দুপুরে সড়ক দুর্ঘটনার এ তথ্য জানানো হয়।
সড়কে দুর্ঘটনা বেড়ে যাওয়ার পেছনে ১০টি কারণ চিহ্নিত করেছে সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে কাজ করা সংগঠন রোড সেফটি ফাউন্ডেশন।
সংগঠনটি বলছে—ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, বেপরোয়া গতি, চালকদের বেপরোয়া মানসিকতা, অদক্ষতা ও শারীরিক মানসিক অসুস্থতা, এবং বেতন ও কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকা সড়ক দুর্ঘটনা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। এ ছাড়া তারা ট্রাফিক ব্যবস্থাপনাকেও দায়ী করেছে সড়ক দুর্ঘটনার জন্য।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশন সারা দেশে সড়ক দুর্ঘটনার কারণ পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ করে জানিয়েছে, ১০ কারণে সড়ক দুর্ঘটনা বেড়েছে। এ কারণগুলোর মধ্যে তরুণ ও যুবকদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো, জনসাধারণের মধ্যে ট্রাফিক আইন না মানার প্রবণতা এবং না জানা, দুর্বল ট্রাফিক আইন ব্যবস্থাপনা, বিআরটিএর সক্ষমতার ঘাটতি এবং গণপরিবহণে চাঁদাবাজি অন্যতম।
সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন কিছু সুপারিশ জানিয়েছে। সংগঠনটি বলছে—দক্ষ চালক তৈরি উদ্যোগ বৃদ্ধি, চালকদের বেতন ও কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করা, বিআরটিএর সক্ষমতা বৃদ্ধি, যানবাহন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও পথচারীদের মধ্যে ট্রাফিক আইনের বাধাহীন প্রয়োগ নিশ্চিত করা, মহাসড়কের স্বল্প গতির যানবাহন চলাচল বন্ধ করে সেগুলোর জন্য আলাদা রাস্তা তৈরি, সকল মহাসড়কে রোড ডিভাইডার নির্মাণ, গণপরিবহণের চাঁদাবাজি বন্ধ, রেল ও নৌপথ সংস্কার ও সম্প্রসারণ করে সড়ক পথের ওপর চাপ কমানো, টেকসই গণপরিবহণ কৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা এবং সড়ক পরিবহণ আইন-২০১৮ বাস্তবায়ন করতে পারলে সড়ক দুর্ঘটনা অনেকাংশে কমে আসবে।
সংগঠনটি আরও মনে করছে—ট্রাকসহ পণ্যবাহী দ্রুতগতির যানবাহন ও মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। মানসিক ও শারীরিকভাবে অসুস্থ ড্রাইভারদের বেপরোয়া গতিতে পণ্যবাহী যানবাহন চালানো এবং অপ্রাপ্ত বয়স্ক ও যুবকদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানোর কারণে তারা নিজেরা দুর্ঘটনায় পতিত হচ্ছে এবং অন্যান্য যানবাহনকে আক্রান্ত করছে।
বিজ্ঞপ্তিতদে বলা হয়েছে, ‘মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা আমাদের ভয়াবহ পরিণতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে। গণপরিবহণ সহজ, সাশ্রয়ী ও উন্নত করে, যানজট কমিয়ে মোটরসাইকেল নিরুৎসাহিত করা অতীব জরুরি।’
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে ‘সড়ক পরিবহণ আইন-২০১৮’ বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মধ্যে কোনো আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে সড়ক পরিবহণ খাতের নৈরাজ্য ও অব্যস্থাপনার কারণে। এ অবস্থার উন্নয়নে টেকসই সড়ক পরিবহন কৌশল প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়ন করতে হবে। এজন্য প্রয়োজন সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছা।