গর্ভাবস্থায় থাইরয়েড চিকিৎসার গাইডলাইন প্রকাশ
গর্ভাবস্থায় থাইরয়েড চিকিৎসার গাইডলাইন প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ এন্ডোক্রাইন সোসাইটি (বিইএস)। আজ বুধবার দুপুরে বিশ্ব থাইরয়েড দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে বিইএস এই গাইডলাইন প্রকাশ করে।
বিইএস সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহজাদা সেলিম বলেন, ‘ভ্রুণ অবস্থা থেকে আমৃত্যু থাইরয়েড হরমোন অপরিহার্য। এ হরমোনের তারতম্যের জন্য শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধি, শরীর মোটা হওয়া, ক্ষয় হওয়া, নারীদের বিভিন্ন সমস্যা, ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা, হার্টের সমস্যা দেখা দেয়। এমনকি চোখ ভয়ঙ্করভাবে বড় হয়ে যেতে পারে।’
‘বন্ধ্যাত্বের অন্যতম কারণ হিসেবে থাইরয়েড হরমোনের তারতম্য দায়ী’ উল্লেখ করে ডা. শাহজাদা সেলিম বলেন, ‘শারীরিক কার্যক্ষমতা সঠিক রাখার জন্য নির্দিষ্ট মাত্রায় এ হরমোন শরীরে থাকা খুবই জরুরি।’
ডা. শাহজাদা আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩০ শতাংশ থাইরয়েড সমস্যায় ভুগছেন। প্রাপ্ত বয়স্ক মহিলাদের প্রায় দুই শতাংশ এবং পুরুষদের প্রায় দশমিক দুই শতাংশ থাইরয়েড হরমোনের বৃদ্ধি জনিত সমস্যায় ভোগে।’
বিএসএমএমইউ এর এই চিকিৎসক বলেন, ‘শিশু-কিশোরদের হাইপোথাইরয়েডিজম হলে তা দ্রুত সমাধান করা না গেলে বুদ্ধি-বৃত্তির বিকাশ স্থায়ীভাবে ব্যাহত হবে।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিইএস প্রধান পৃষ্ঠপোষক অধ্যাপক ডা. মো. ফারুক পাঠান, বিএমএ সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. এহতেসামুল হক চৌধুরী, ডায়াবেটিক অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক এ কে আজাদ খান, ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা. এবিএম আবদুল্লাহ, বিইএস প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. এস এম আশরাফুজ্জামান, প্রেসিডেন্ট ইলেক্ট অধ্যাপক ডা. মো. হাফিজুর রহমান, ভাইস প্রেসিডেন্ট ডা. ফারিয়া আফসানা, অধ্যাপক ডা. ফিরোজ আমিন, মেম্বার সেক্রেটারি ডা. মারুফা মুস্তারি, বিএসএমএমইউ’র এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এমএ হাসানাত, গাইনোকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. বেগম নাসরিন প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যশিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. সাইফুল হাসান বাদল বলেন, ‘আমেরিকাতে শতকরা ২৫ শতাংশ বাজেট বরাদ্দ থাকে রিসার্চ অ্যান্ড ডেভোলপমেন্টের জন্য। আপনারাও রিসার্চ অ্যান্ড ডেভোলপমেন্টে সরকারি বরাদ্দের দাবি করেছেন। আমাদের অনেক অদম্য ও যোগ্য রিসার্চার আছেন। সরকার এই নিয়ে কাজ করছে। বেশি করে স্ক্রিনিং, রিসার্চ করতে হবে। আপনারা এদিকে জোর দিন।’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘থাইরয়েড নিয়ে স্ক্রিনিং, রিসার্চ অনেক কম খরচে করাই আমাদের মূল উদ্দেশ্য। সাধারণ মানুষকে আরও সচেতন করতে হবে এবং থাইরয়েড প্রতিরোধে চিকিৎসকদের আরও তৎপর হতে হবে।’
বারডেম জেনারেল হাসপাতাল ও ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজের ডায়াবেটিস, থাইরয়েড ও হরমোন রোগ বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর মো. ফিরোজ আমিন বলেন, ‘শুধু প্রেগন্যান্সি নিয়ে গাইডলাইন প্রকাশ করলে হবে না, সারা বাংলাদেশ নিয়ে ন্যাশনাল গাইডলাইন প্রকাশ করতে হবে। আপনাদের নিয়েই এই কাজ করতে হবে, মন্ত্রণালয় অর্থায়ন করবে।’