গাজীপুরে চোর সন্দেহে যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
গাজীপুরের শ্রীপুরে রিকশাভ্যান চুরির সন্দেহে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আজ রোববার থানায় মামলা হয়েছে।
নিহতের নাম রানা মিয়া (৩০)। তিনি শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের মুলাইদ গ্রামের আমিরুল ইসলামের ছেলে।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন, এ ঘটনায় রোববার দুপুরে নিহতের বাবা বাদী হয়ে মামলা করেছেন। মামলায় ভাঙ্গারি ব্যবসায়ীর ছেলে শিপন মিয়া (২৫), আকাশ মিয়া (২২) ও উজ্জ্বল মিয়া (২৫) ও ইমনের (২৬) নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাত আরও কয়েকজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
নিহতের বাবা ও স্থানীয়রা জানান, শ্রীপুর উপজেলার কেওয়া পশ্চিমখণ্ড গ্রামের ভাঙ্গারি ব্যবসায়ী শিপন মিয়ার পাঁচটি রিকশাভ্যান সম্প্রতি চুরি হয়। এসব রিকশাভ্যান চুরির সন্দেহে রানা মিয়াকে গত শনিবার ভোর রাতে আটক করে মুলাইদ (পশ্চিম পাড়া) গ্রামের পিয়ার আলী কলেজের পেছনে নিয়ে যায় শিপন ও তাঁর লোকজন। তাদের বেধড়ক পিটুনির একপর্যায়ে প্রাণ বাঁচাতে তিনটি ভ্যান চুরি করেছে বলে জানায় রানা মিয়া। এরপরও রানাকে পেটাতে থাকে তারা।
এ সময় রানার বাবাসহ স্থানীয়রা গুরুতর আহত রানা মিয়াকে ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ জানান। কিন্তু, তাদের অনুরোধ উপেক্ষা করে তাঁকে পেটাতে থাকে।
যুবকদের বেধড়ক পিটুনির একপর্যায়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন রানা। এসময় রানার কাছ থেকে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর রেখে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় গুরুতর আহত রানাকে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানের চিকিৎসক রানাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন। পরে ওই হাসপাতাল থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে রানাকে সন্ধ্যায় মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক।
নিহতের বাবা আরও বলেন, ‘আমি বারবার তাদের পায়ে ধরে ছেলেকে ক্ষমা করে দেওয়ার কথা বলি। কিন্তু, তারা ছাড়েনি। মিথ্যা অপবাদ দিয়ে তারা আমার ছেলেকে নির্যাতন করে বুকের পাঁজর ও দুই হাত-পা ভেঙে ফেলে। তাদের বেধড়ক পিটুনিতে আমার ছেলের মৃত্যু হয়েছে। আমার ছেলের শরীরের এক ইঞ্চি পরিমাণ জায়গা বাকি নেই, যেখানে আঘাত করেনি। আমার ছেলেকে তারা হত্যা করেছে। আমি আমার ছেলের হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও শাস্তি চাই।’
ওসি মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান জানান, ঘটনার পর থেকে অভিযুক্তরা পলাতক রয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ তৎপর রয়েছে।