গাজীপুরে বেতন-ভাতার দাবিতে পোশাকশ্রমিকদের বিক্ষোভ
গাজীপুরে বকেয়া বেতন ভাতার দাবিতে এক পোশাক কারখানার শ্রমিকরা বুধবার কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ করেছে। তারা কারখানার পাশের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা অবরোধ করে। এ সময় তারা বেশ কিছু গাড়ির কাঁচ ভাঙচুর করে। সন্ধ্যায় পুলিশ টিয়ারসেল ছুঁড়ে আন্দোলনরতদের ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
আন্দোলনরত শ্রমিকরা ও পুলিশ জানায়, গাজীপুর সদর থানাধীন দক্ষিণ সালনা এলাকার শ্যামলী গার্মেন্টসে প্রায় আড়াই হাজার শ্রমিক-কর্মচারী রয়েছে। কারখানার শ্রমিকরা এক মাসের (সেপ্টেম্বর) এবং কর্মচারীরা পাঁচ মাসের বেতন ভাতা পাওনা রয়েছে। কর্তৃপক্ষ একাধিকবার আশ্বাস দিয়ে তারিখ নির্ধারণ করলেও তাদের পাওনাদি পরিশোধ করেনি। সর্বশেষ গত সোমবার ছিল শ্রমিক-কর্মচারীদের গত সেপ্টেম্বর মাসের বকেয়া বেতন ভাতা পরিশোধের নির্ধারিত তারিখ। কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষ এদিন শ্রমিকদের পাওনাদি না দিয়ে পরদিন মঙ্গলবার পরিশোধের আশ্বাস দেয়। এদিনও শ্রমিকদের বেতন ভাতা পরিশোধ না করে বুধবার পরিশোধের আশ্বাস দিয়ে পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করে।
আজ বুধবার দুপুরের খাবারের বিরতির পর আড়াইটা পর্যন্ত অপেক্ষা করার পরও পাওনা বেতন-ভাতা পরিশোধ না করায় শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে বিকেল ৩টার দিকে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা সেপ্টেম্বর মাসের বকেয়াসহ চলতি মাসের বেতনভাতা পরিশোধের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে। তারা কর্তৃপক্ষের সাড়া না পেয়ে কারখানা থেকে বের হয়ে পাশের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের উপর অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। এ সময় তারা মহাসড়কের উপর বসে পড়ে এবং গাছের গুঁড়ি ও ইট ফেলে অবরোধ সৃষ্টি করে। এতে ওই মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। মহাসড়কের উভয় দিকে যানবাহন আটকা পড়ে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার মো. আব্দুল মোনায়েম ও স্থানীয়রা জানান, শ্রমিক অসন্তোষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানের জন্য কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। পুলিশ সদস্যরা অবরোধকারী শ্রমিকদের বুঝিয়ে মহাসড়কের উপর থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেও শ্রমিকরা সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত অবরোধ তুলে নেয়নি। প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা অবরোধ অব্যাহত থাকায় মহাসড়কের উভয় দিকে যানবাহন আটকা পড়ে যানজটের সৃষ্টি হয় এবং যাত্রীদের ভোগান্তি পোহাতে হয়। সন্ধ্যায় আন্দোলনকারীরা অন্তত ৩৫/৪০টি গাড়ির কাচ ভাঙচুর করে। তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়লে পুলিশের কয়েক সদস্য আহত হয়। এক পর্যায়ে পুলিশ কয়েক রাউন্ড টিয়ারসেল ছুঁড়ে আন্দোলনরতদের ছত্রভঙ্গ করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে এবং মহাসড়কে পুনরায় যানবাহন চলাচল শুরু হয়।