গার্ডার চাপায় প্রাণহানি : শাস্তিতে আপত্তি নেই চীনের
রাজধানীর উত্তরায় বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের কাজ চলাকালীন ক্রেন থেকে গার্ডার পড়ে প্রাইভেটকারের পাঁচ যাত্রী নিহতের ঘটনায় গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করে বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বলেছেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না গেজহুবা গ্রুপ করপোরেশনের (সিজিজিসি) বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিলে কোনো আপত্তি থাকবে না। এসময় তিনি গার্ডারকাণ্ডে আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন।
আজ বৃহস্পতিবার সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নূরীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে ১৫ আগস্টের ওই দুর্ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন লি জিমিং।
চীনা রাষ্ট্রদূত জানান, বিআরটি প্রকল্পের সওজ অংশের নির্মাণ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল প্রতিষ্ঠানের পক্ষে তদন্তের জন্য চীন থেকে বাংলাদেশে পৌঁছেছে। দলের সদস্যরা তদন্ত কমিটিকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত।
এদিকে, গতকাল ঢাকা, গাজীপুর, সিরাজগঞ্জ ও বাগেরহাটের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ক্রেনচালকসহ নয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১।
এ বিষয়ে র্যাব-১-এর এএসপি নোমান বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঢাকা, গাজীপুর, সিরাজগঞ্জ ও বাগেরহাটের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে গার্ডার দুর্ঘটনার ঘাতক ক্রেনচালক, তার সহকারী এবং নিরাপত্তার জন্য নিয়োজিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তাকর্মীসহ নয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
এর আগে গত সোমবার উত্তরার জসীম উদ্দীন মোড়ে বিআরটি প্রকল্পের ফ্লাইওভারের গার্ডার পড়ে নিহত হন প্রাইভেটকারে থাকা একই পরিবারের পাঁচজন।
জানা যায়, গত ১৩ আগস্ট বিয়ে হয় হৃদয় এবং রিয়া মনির। ১৫ আগস্ট বৌভাত শেষে হৃদয়ের বাবা রুবেল মিয়া প্রাইভেটকার চালিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় প্রাইভেটকারে ছিলেন হৃদয়, রিয়া, রিয়ার মা ফাহিমা (৩৭), তার খালা ঝর্না (২৮) এবং ঝর্নার দুই সন্তান জান্নাত (৬) ও জাকারিয়া (২)। পথে উত্তরার জসীম উদ্দীন মোড়ে পৌঁছালে বিআরটি প্রকল্পের ফ্লাইওভারের গার্ডার পড়ে নবদম্পতি হৃদয় ও রিয়া ছাড়া সবাই মারা যান। এসময় গুরুতর আহত হন নবদম্পতি।
বুধবার বিআরটি প্রকল্পের গার্ডার চাপায় পাঁচজনের মৃত্যুর ঘটনায় প্রত্যেকের পরিবারকে এক কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে রিট করা হয়। রিটে গত পাঁচ বছরে ফ্লাইওভারের নির্মাণ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিআরটি কী ধরনের নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে, তার একটি প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।