গায়ে আগুন দিয়ে দগ্ধ অন্তঃসত্ত্বা
রাজধানীর মালিবাগের গুলবাগে কেরোসিন ঢেলে গায়ে আগুন দিয়েছেন এক অন্তঃসত্ত্বা। পাপিয়া সারোয়ার ওরফে মিম (১৮) নামের এই গৃহবধূর অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁর শরীরের ৯৫ শতাংশ পুড়ে গেছে বলে চিকিৎসক জানিয়েছেন। এর আগেও তিনি হারপিক খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন বলে দাবি তাঁর মায়ের।
আজ শনিবার দুপুরে গুলবাগের ঝিলপাড় এলাকার বাসায় মিম গায়ে আগুন দেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। এ ঘটনায় তাঁর স্বামী মো. রামিমকে আটক করেছে পুলিশ।
এ বিষয়ে ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘প্রথমে ওই নারীকে ঢাকা মেডিকেলে আনা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হওয়ায় সেখান থেকে তাঁকে শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে আনার পর ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা পাপিয়ার স্বামী রামিমকে আটক করেন। রামিমকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। বিষয়টি খিলগাঁও থানাকে জানানো হয়েছে।’
বাচ্চু মিয়াকে জানান, পারিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পাপিয়া সারোয়ার নগরের শান্তিবাগের বেসরকারি সিটি ইন্টারন্যাশনাল কলেজের উচ্চমাধ্যমিক (এইচএসসি) প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি গুলবাগের ঝিলপাড়ে তাঁর স্বামীর সঙ্গে থাকতেন। স্বামী রামিমের খিলগাঁওয়ে মোবাইল রিচার্জের দোকান রয়েছে। আজ দুপুর ১২টার দিকে ওই বাসায় পাপিয়া গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেন। এ সময় তাঁর চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে পাপিয়ার শরীরে আগুন জ্বলতে দেখেন। পাপিয়ার মা–বাবার বাসা তাঁর বাসার কাছেই। পাপিয়াদের বাড়ির মালিকের কাছ থেকে খবর পেয়ে তাঁরা এসে পাপিয়ার শরীরের আগুন নেভান। পরে তাঁকে খিলগাঁওয়ের বেসরকারি খিদমাহ হাসপাতালে নেওয়া হয়। এরপর নেওয়া হয় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে।
এ ঘটনার জন্য রামিমকে দায়ী করেছেন পাপিয়ার মা পারভীন আক্তার। তিনি বলেন, ‘পাপিয়াকে বিয়ে করার পর থেকেই রামিমের অন্য এক নারীর সঙ্গে সম্পর্ক হয়। এ নিয়ে ঝগড়ার জেরেই পাপিয়া নিজের শরীরে আগুন দিয়েছেন। একই কারণে এক বছর আগেও পাপিয়া হারপিক খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন।’
আটক হওয়ার আগে রামিম বলেন, ‘কী কারণে, কেন গায়ে আগুন দিয়েছে, এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। ওই সময় আমি বাসার বাইরে ছিলাম।
বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক এস এম আইউব হোসেন বলেন, ‘পাপিয়ার শরীরের ৯৫ শতাংশ পুড়ে গেছে। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক।’