গুলশানে বাসায় মিলল মেডিকেল শিক্ষার্থীর লাশ
মালয়েশিয়ার একটি মেডিকেল কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ফাবিয়া হায়দার (২১)। ঢাকার গুলশানের নিকেতনে নিজেদের বাসা থেকে অনলাইনে ক্লাস করতেন তিনি। করোনাভাইরাসের কারণে সেখানে যাওয়ার সুযোগ হয়নি তাঁর। এর মধ্যেই আজ শনিবার সকালে বাসা থেকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় ফাবিয়ার লাশ উদ্ধার করা হয়।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গুলশান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) বজলুর রহমান এনটিভি অনলাইনকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
এসআই বজলুর রহমান জানান, আজ সকালে ঘুম থেকে উঠে ফাবিয়ার বাবা আলম হায়দার দেখতে পান, তাঁর মেয়ে ফ্ল্যাটের একটি কক্ষের ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় আছে। পরে মেয়েকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
বজলুর রহমান আরও জানান, আলম হায়দার গুলশান থানা পুলিশের কাছে দাবি করেছেন, তাঁর মেয়ে ফাবিয়া হায়দার অন্যদিনের মতোই গতকাল শুক্রবার রাতের খাবার খেয়ে ঘুমাতে যান। কিন্তু তিনি ঘুম থেকে উঠে মেয়ের কক্ষে প্রবেশ করে দেখেন, মেয়ে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে ছিল। পরে তিনি মেয়েকে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক জানান, হাসপাতালে আনার আগেই তিনি মারা গেছেন।
আলম হায়দার ও তাঁর স্ত্রীর বরাত দিয়ে এসআই বজলুর রহমান বলেন, ‘ফাবিয়ার মা-বাবা দুজনই আমাকে বলেছেন, তাঁদের মেয়ে মানসিক রোগে আক্রান্ত ছিলেন। এই অবস্থার মধ্য দিয়েও ফাবিয়া অনলাইনে নিয়মিত ক্লাস করতেন। মালয়েশিয়ার মেডিকেলে ভর্তি হলেও ফাবিয়া সেখানে একবারও যেতে পারেননি। করোনা পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হলে তাঁর মালয়েশিয়ায় যাওয়ার কথা ছিল।’
ফাবিয়ার পরিবারের বরাত দিয়ে এসআই বজলুর আরও বলেন, ‘এর আগে আরও দু-তিনবার ফাবিয়া হায়দার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন। তবে এখন কী কারণে তিনি আত্মহত্যা করেছেন, পরিবার জানে না।’
বজলুর রহমানের দাবি, তিনি এবং গুলশান থানার থানার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ফাবিয়া হায়দারের কক্ষে গিয়ে দেখেন, ওই কক্ষের দরজা লাগানো যায় না। কেন দরজা লাগানো যায় না, এমন প্রশ্নের জবাবে বজলুর রহমান বলেন, ‘হতে পারে ফাবিয়া এর আগেও আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন বলে তাঁর বাবা এই ব্যবস্থা করে রেখেছেন।’
ফাবিয়া মানসিক রোগে আক্রান্ত ছিলেন কি না, বা পরিবারের এ দাবি সঠিক কি না, তা নিয়ে বিস্তারিত তদন্তের কথা জানান এসআই বজলুর রহমান। তবে বজলুর বলেন, ‘যদিও আলম হায়দার গুলশান থানা পুলিশের কাছে একটি আবেদন করেছেন। আবেদনে তিনি বলেছেন, বিনা ময়নাতদন্তে তাঁর মেয়ের লাশ চান তিনি। হয়তো ময়নাতদন্ত করা হবে না।’
এর আগে ফাবিয়াকে উদ্ধার করে তাঁর বাবা আলম হয়দার প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে ওই হাসপাতাল থেকে বলা হয়, ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে যেতে। এরপর ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয় ফাবিয়াকে।