গুলিস্তানে বলাৎকারের পর শিশু হত্যা, খালু গ্রেপ্তার
রাজধানীতে শিশু সানি (৫) হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটনসহ মূল আসামি চাঁন মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা মতিঝিল বিভাগ। আজ বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পল্টন থানা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
দুপুর ১টার দিকে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, শিশু সানি গত ৯ নভেম্বর রাতে নিখোঁজ হয়। তাকে খুঁজে না পেলে মা ঝর্ণা বেগম পরের দিন অর্থাৎ, ১০ নভেম্বর সকালে তার বোন জামাই মো. চাঁন মিয়াকে বিষয়টি জানান। ওইদিন রাতে চাঁন মিয়ার মাধ্যমে ঝর্ণা বেগম সংবাদ পান পল্টন মডেল থানা এলাকায় পুলিশ বক্সের সামনে শিশু সানির বস্তাবন্দি লাশ পাওয়া গেছে।
এ খবর পাওয়ার পর পল্টন মডেল থানায় গিয়ে ঝর্ণা বেগম চাঁন মিয়ার সহায়তায় ল্যাংড়া রাসেল, পিন্টু, জুয়েল, কালাম, পায়েল ও হীরাকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। ওই মামলা প্রথমে পল্টন থানা পুলিশ তদন্ত করে এবং পরবর্তীতে মামলাটি গোয়েন্দা মতিঝিল বিভাগ তদন্ত শুরু করে।
তদন্তে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, ‘ঘটনার আগের দিন রাতে চাঁন মিয়া শিশু সানিকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। ঘটনার দিন ৯ নভেম্বর বিকেলে ফুটপাত থেকে ৬০ টাকা দিয়ে চাঁন মিয়া একটি যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট কেনেন। তারপর সন্ধ্যা ৭টায় স্টেডিয়াম এলাকা থেকে ৫০ টাকা দিয়ে পাঁচটি ঘুমের ওষুধ কেনেন।
হাফিজ আক্তার বলেন, ‘সাড়ে ৭টায় স্টেডিয়ামের একটি দোকান থেকে জুস কিনে ঘুমের ওষুধ ওই জুসের সঙ্গে মিশিয়ে দেন চাঁন মিয়া। আর নিজে যৌন উত্তেজক ট্যাবলেটটি খেয়ে ফেলেন। পরে রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টায় শিশু সানিকে স্টেডিয়ামের ২ নম্বর ও ৩ নম্বর গেইটের মাঝামাঝি অন্যান্য পথশিশুর সঙ্গে খেলতে দেখে সানিকে ডেকে নিয়ে আসেন চাঁন।
ডেকে নিয়ে চাঁন মিয়া ঘুমের ওষুধ মেশানো জুস খাইয়ে দেয় সানিকে। জুসটি খাওয়ায় সানি ৩০ মিনিটের মধ্যে আস্তে আস্তে দুর্বল হয়ে পড়ে। পরে রাত আনুমানিক ১১টায় পল্টন মডেল থানাধীন গুলিস্তান পার্ক এলাকার নির্জন স্থানে নিয়ে বলাৎকার শুরু করেন। পরে সানি চিৎকার শুরু করলে চাঁন মিয়া তার গলা টিপে ধরেন। এসে সানির মৃত্যু ঘটে। সানির মৃত্যু নিশ্চিত করার পরও লাশের সঙ্গে পাশবিক বিকৃত যৌন নির্যাতন চালান চাঁন মিয়া। পরে চাঁন মিয়া নিজেই লাশ বস্তাবন্দি করে রাতে পুলিশ বক্সের সামনে ফেলে চলে যান। এরপর সানির মাকে লাশের খবর দেওয়ার মিথ্যা নাটক করেন।