গুলিস্তানে বিস্ফোরণ : হাসপাতালে ভর্তি আহতদের কার কী অবস্থা
রাজধানীর সিদ্দিকবাজারে বিস্ফোরণের ঘটনায় এ পর্যন্ত ১৭ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছেন শতাধিক। এখনো নিখোঁজ রয়েছেন পাঁচজন। আহতদের মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২০ জন ও শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে দশজন ভর্তি রয়েছেন।
আজ বুধবার (৮ মার্চ) দুপুরে সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, আহতদের মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২০ জনের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আর ১৯ জন মুটোমুটি ভালোর দিকে রয়েছেন। অপরদিকে শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে দশজনের মধ্যে তিনজনের অবস্থা সবচেয়ে বেশি খারাপ। তবে কেউ আশঙ্কা মুক্ত নয়। কেননা এখানে সবার ৫০ থেকে ৮০ শতাংশ পুড়ে গেছে।
শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, ‘গতকালের দুর্ঘটনায় আমাদের এখানে ১১ জন রোগী ছিল। তার মধ্যে একজনকে ঢাকা মেডিকেলে ট্রান্সফার করা হয়েছে। কারণ তার শরীরে আগুন লাগেনি। এছাড়া ভর্তি ১০ জনের মধ্যে তিনজন আইসিইউতে, দুইজন লাইফ সাপোর্টে আছে। আর বাকিরা আছেন এসডিইউতে।’
সামন্ত লাল আরও বলেন, ‘যারা আছে তাদের কেউই শঙ্কামুক্ত নয়। কারও শরীরের ৮০ শতাংশ, কারও ৯০ শতাংশ, কারো ৫০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। সবারই শ্বাসনালী পুড়ে গেছে। আমরা কাউকেই শঙ্কামুক্ত বলতে পারব না।’
শেখ হাসিনা বার্নে আহত ১০ জনের কে কোথায় ভর্তি
আহত অবস্থায় মো. হাসান ও জাহান আইসিইউতে ভর্তি। হাসান আইসিইউ এর ১১ নম্বর বেডে ও জাহান ৯ নম্বর বেডে আছেন। মো. মুসা এসডিইউ এর ৬০২ নম্বর ওয়ার্ডের ৬ নম্বর বেডে আছেন। ওলিল শিকদার, খলিল শিকদার, ইয়াসিন আলী, মো. বাবলু, আল-আমীন, বাচ্চু মিয়া পোস্ট ওপারেটিভে ভর্তি আছেন। এ ছাড়া আজম ৬০২ নম্বর ওয়ার্ডের এক নম্বর বেডে ভর্তি আছেন এবং মোস্তফা নামে একজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বার্ন ইউনিট থেকে ঢাকা মেডিকেলে হস্তান্তর করা হয়েছে।
কার কত শতাংশ পুড়েছে
মো. হাসানের ১২ শতাংশ, জাহানের ৫০ শতাংশ, মো. মুসার ৯৮ শতাংশ, ওলিল শিকদারের ২০ শতাংশ, খলিল শিকদারের ৮ শতাংশ, ইয়াসিন আলীর ৫৫ শতাংশ, মো. বাবলুর ১৮ শতাংশ, আল-আমীনের ১৫ শতাংশ, বাচ্চু মিয়ার ৪০ শতাংশ ও আজমের ৮০ শতাংশ পুড়েছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক বলেন, এরমধ্যে একজন ইন্টার্ন ডাক্তার আইসিইউতে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছে। আমরা তাকে আশঙ্কামুক্ত বলব না। বাকি সবার অবস্থার উন্নতি হচ্ছে।
ঢামেক পরিচালক বলেন, আমাদের এখানে ১৮টা মৃতদেহ ছিল। কিন্তু ১টা মৃতদেহ সিদ্দিকবাজারের ঘটনায় সাথে সম্পৃক্ত না। অর্থাৎ ১৭ জন এই ঘটনায় মারা গেছে। এরমধ্যে ১৬ জন জেলা প্রশাসন অফিসের সহযোগিতা নিয়েছেন আর একজন সহযোগিতা ছাড়াই মৃতদেহ নিয়ে চলে গেছেন।
নাজমুল হক বলেন, ১৭ জন নিহতের মধ্যে ১৩ জনের মৃতদেহ হাসপাতালে এসেছে। যা আমরা চিকিৎসা করার সুযোগই পাইনি। বাকি ৪ জন আমাদের এখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে। মানবিক কারণে অনেক নিয়মকানুন শিথিল করা হয়েছে। মৃতদেহগুলো পোস্টমর্টেম করার কথা বা অন্যান্য পদ্ধতি থাকে। কিন্তু, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ প্রশাসন মিলে দ্রুত মৃতদেহগুলো হস্তান্তর করেছে।