গৃহকর্তার স্ত্রীকে হত্যা : গৃহকর্মীর যাবজ্জীবন
রাজধানীর রমনায় গৃহকর্ত্রী আকিকা খাতুন ওরফে জেবাকে হত্যার দায়ে গৃহকর্মী রাণী ওরফে নূপুরের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৮-এর বিচারক বদরুল আলম ভূঁইয়া এই রায় দেন।
বিচারক রায়ে আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং তা অনাদায়ে আরও দুই মাসের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন।
মামলার নথি থেকে জানা গেছে, গৃহকর্ত্রী আকিকা খাতুন ওরফে জেবার স্বামী আশিকুর রহমান ওরফে জুয়েলকে গৃহকর্ত্রী রাণী ওরফে নূপুর পছন্দ করত। তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দীর্ঘদিন ধরে চলা এ সম্পর্কের এক পর্যায়ে জুয়েলকে বিয়ের জন্য বলে। কিন্তু জুয়েল স্ত্রী থাকায় বিয়ের বিষয়ে এড়িয়ে যায়।
একপর্যায়ে গৃহকর্মী ধারণা করে, আকিকা খাতুন ওরফে জেবাকে হত্যা করলে গৃহকর্ত্রী স্বামী আশিকুর রহমান ওরফে জুয়েলকে একবারে কাছে পাবে।
পরে নূপুরের বিভিন্ন আচরণে আকিকা খাতুন ওরফে জেবা বিষয় বুঝতে পারেন এবং গৃহকর্মীকে বকাবকি করেন। এই কারণে তাদের মধ্যে মনোমানিল্য হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় গৃহকর্মী রাণী ওরফে নূপুর বিগত ২০০৯ সালের ১৮ নভেম্বর গৃহকর্মী দুপুরে ঘুমাতে গেলে গৃহকর্মী ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে হত্যা করে। এ ঘটনার পরে পুলিশ নিহতের স্বামী জুয়েল ও নূপুরকে আটক করে।
এরপরে বিগত ২০০৯ সালের ২০ নভেম্বর রাজধানীর রমনা থানায় এসআই জাফর আলী বাদী হয়ে দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। কিন্তু হত্যা মামলা পুলিশ করলে নিহত আকিকা খাতুন ওরফে জেবা ধর্ম পরিবর্তন করায় তার পরিবার মামলা করিতে রাজি হয়নি।
মামলার পরে নূপুর আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। জবানবন্দি শেষে রমনা থানা পুলিশ আদালতে নূপুরের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
সেই অভিযোগপত্রের পরে মামলাটি বিচারের জন্য বিশেষ জজ-২ আদালতে বদলি হয়ে আসে। মামলা চলাকালে বিচারক সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে মামলার রায় ঘোষণা করেন।