গৃহবধূকে নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল, স্বামী ও শ্বশুর গ্রেপ্তার
ইফতারি তৈরি নিয়ে স্বামী ও শ্বশুরের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন এক গৃহবধূ। মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার পৃথিমপাশা ইউনিয়নের সুলতানপুর গ্রামে সোমবার (১৭ এপ্রিল) এ ঘটনা ঘটে।
নির্যাতনের একটি ভিডিও ইতোমধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এরপরেই ওই গৃহবধূর ভাই থানায় অভিযোগ করেন। অবশেষে নির্যাতনের ২৪ ঘণ্টা না পেরোতেই নির্যাতনকারী শ্বশুর ও স্বামীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন শ্বশুর শফিক মিয়া (৬৩) ও স্বামী আব্দুস সালাম (৩২)।
গতকাল মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) সন্ধ্যায় মৌলভীবাজার জেলা পুলিশ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়ে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, ‘চার বছর আগে পারিবারিকভাবে রোজিনা বেগমের সঙ্গে আব্দুস সালামের বিয়ে হয়। তাদের সংসারে একটি ছেলে সন্তান রিয়েছে। বিয়ের পর থেকেই স্বামী আব্দুস সালাম যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার করত। রোজিনার পরিবার আর্থিকভাবে দুর্বল হওয়ায় যৌতুকের দাবি পূরণ করতে পারেনি।’
মোহাম্মদ জাকারিয়া আরও বলেন, ‘সোমবার গভীর রাতে সুলতানপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে রোজিনার স্বামী আব্দুস সালামকে প্রথমে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে মঙ্গলবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার মূল হোতা রোজিনার শ্বশুর শফিক মিয়াকেও মঙ্গলবার বিকেলে তার মেয়ের জামাইয়ের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।’
থানায় লিখিত অভিযোগে রোজিনার ভাই বাবুল মিয়া জানান, গত ১৬ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টার দিকে সুলতানপুর শ্বশুর বাড়িতে ইফতারের শরবতের প্যাকেট কাটাকে কেন্দ্র করে রোজিনার সঙ্গে আব্দুস সালাম ও তার দেবর রুমান মিয়ার কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে রোজিনাকে তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন এলোপাতাড়ি মারধর করে। পরের দিন সকালের দিকে রোজিনার কাছে তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন যৌতুক বাবদ এক লাখ টাকা এনে দিতে বলে। যৌতুকের টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে শ্বশুর বাড়ির লোকজন তাকে ফের মারধর করতে থাকে। প্রাণের ভয়ে প্রতিবেশি জ্যোৎস্না বেগমের বাড়িতে আশ্রয় নিলে রোজিনার শ্বশুর ও স্বামী রোজিনাকে চুলের মুঠি ধরে মাটিতে ফেলে টেনে-হিচড়ে নিয়ে আসে। এ দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।