গোপালগঞ্জে ১২ ছাত্রলীগনেতার ডিজিটাল আইনে মামলা প্রত্যাহারে সমঝোতা
গোপালগঞ্জে ১২ ছাত্রলীগনেতার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারে সমঝোতা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শনিবার কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে এ সমঝোতা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
উপজেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এ সমঝোতা বৈঠক আহ্বান করা হয়। সমঝোতা বৈঠকসূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের ২৭ আগস্ট পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি চৌধুরী সেলিম আহম্মেদ ছোটন, সাধারণ সম্পাদক আলিউজ্জামান জামিরসহ ১২ ছাত্রলীগনেতা গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. শওকত আলীর বাবা আব্দুল কাদের মিয়াকে ‘স্বাধীনতাবিরোধী’ উল্লেখ করে ফেসবুকে পোস্ট দেন। এই পোস্টের কারণে মো. শওকত আলী বাদী হয়ে ওই ১২ ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করেন। প্রায় দেড় বছর মামলাটি চলার পরে উপজেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে বাদীর সঙ্গে সমঝোতা বৈঠক করা হয়। এ বৈঠকে ছাত্রলীগের নেতারা তাদের ভুল স্বীকার করেন।
সমঝোতা বৈঠকে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলী খান।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ভবেন্দ্রনাথ বিশ্বাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমঝোতা বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর এপিএস-২ গাজী হাফিজুর রহমান লিকু, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. শওকত আলী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আয়নাল হোসেন শেখ, উপজেলা চেয়ারম্যান বিমল কৃষ্ণ বিশ্বাস, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান হাওলাদার, পৌর মেয়র হাজি মো. কামাল হোসেন শেখ বক্তব্য দেন।
গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. শওকত আলী বলেন, আমার পরিবার ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীনতার স্বপক্ষে কাজ করেছে। ওই সময়ে স্বাধীনতাবিরোধীরা আমাদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজাকার-আলবদরা আমাদের ব্যাপক ক্ষতি করে। আমার বাবাকে নিয়ে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা ফেসবুকে যে পোস্ট দিয়েছিলেন তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। ছাত্রলীগের এসব নেতা তাদের ভুল বুঝতে পেরেছেন। তাই আমি এই সমঝোতা বৈঠকের মাধ্যমে মামলাটি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আয়নাল হোসেন শেখ বলেন, ছাত্রলীগনেতা ও যুগ্ম সচিব মো. শওকত আলীর পরিবারের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝিকে কেন্দ্র করে উদ্ভুত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। পরে উভয়পক্ষ তাদের ভুল বুঝতে পেরে সমঝোতা বৈঠকে বসতে রাজি হয়। আমরা সমঝোতা বৈঠকের আয়োজন করে দুই পক্ষকে মিলিয়ে দিয়েছি। ভবিষ্যতে কেউ যাতে এ ধরনের কাজ না করে সে জন্য সবাইকে সতর্ক করা হয়। সমঝোতা বৈঠক সফল হয়েছে। এ জন্য আমি উভয় পক্ষকে স্বাগত জানাই।
অভিযুক্ত পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি চৌধুরী সেলিম আহম্মেদ ছোটন বলেন, আমরা আমাদের ভুল বুঝতে পেরেছি। এ ভুলের জন্য আমরা অনুতপ্ত। আমরা সমঝোতা বৈঠকে ক্ষমা প্রার্থনা করি। মামলার বাদী গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব সহ আওয়ামী লীগ নেতারা আমাদের ক্ষমা করে দেন। দীর্ঘ দেড় বছরের ভুল বোঝাবুঝির সমাধান হয়েছে। এ জন্য আমরা সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।