গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের বাড়িতে হামলার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের বাড়িতে দক্ষিণ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতির নির্দেশে যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ, ছাত্রলীগ অতর্কিত হামলা করেছে বলে অভিযোগ করেছে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা বিএনপি। আজ মঙ্গলবার জিনজিরায় দলীয় কার্যালয়ে ওই হামলার প্রতিবাদে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন এ অভিযোগ করে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা বিএনপি। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোজাদ্দেদ আলী বাবু।
এ সময় মোজাদ্দেদ আলী বাবু অভিযোগ করে বলেন, সারা দেশে জ্বালানি তেল, গ্যাস ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে বিএনপি আয়োজিত কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে ৩১ জুলাই ভোলা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলনেতা আব্দুর রহিম পুলিশের গুলিতে নিহত হন। একই দিনে ভোলা জেলা ছাত্রদল সভাপতি নুরে আলম পুলিশের ছোড়া গুলিতে আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এই হত্যাকাণ্ড ও জ্বালানি তেলসহ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে বিএনপি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি ঘোষণা করে। সেই কর্মসূচির অংশ হিসেবে আমরা কেরানীগঞ্জ উপজেলা দক্ষিণ বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে গত ২২ আগস্ট তেঘরিয়া ইউনিয়নে একটি মশাল মিছিল করি। সেই মিছিলে আমাদের নেতৃত্ব দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ, ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আবুল আশফাক, কেরানীগঞ্জ উপজেলা দক্ষিণ শাখা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আমি।
মোজাদ্দেদ আলী বাবু লিখিত বক্তব্যে আরও বলেন, ‘এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল সোমবার একটি মশাল মিছিল বের হয়। এ সময় হঠাৎ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা অতর্কিত আক্রমণ করে এবং আমাদের অনেক নেতাকর্মীকে মারাত্মক আহত করে। এ সময় তারা আমাদের তেঘরিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি খোরশেদ জমিদারের বাড়ি, তার মালিকানাধীন মার্কেটে তাণ্ডব চালায়। তারা শুধু হামলা করেই ক্ষান্ত হয়নি, সেই ঘটনায় উল্টো আমাদের ৫১ জন নেতাকর্মীর নামে মিথ্যা মামলা দিয়েছে।’
মোজাদ্দেদ আলী বাবু আরও বলেন, ‘গতকাল আমাদের পাঁচটি ইউনিয়নের সাতটি সাংগঠনিক এলাকাতে কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তারই অংশ হিসেবে দক্ষিণ থানা সভাপতি অ্যাভোকেট নিপুণ রায়ের নেতৃত্বে মশাল মিছিল বের হয়। শান্তিপূর্ণ মিছিল শেষে যখন নেতাকর্মীরা সুশৃঙ্খলভাবে এলাকা ত্যাগ করেছিলেন, তখন দক্ষিণ থানা আওয়ামী লীগে সভাপতি তাদের সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের নিয়ে কেরানীগঞ্জ বিএনপির অভিভাবক, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের বাসভবনে অতর্কিত হামলা চালিয়ে বাড়ির দরজা, জানালা ভাঙচুর করে। এরপর বৃষ্টির মতো ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। এ সময় সেখান থেকে আমাদের স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা মুন্না ও বিপ্লবকে পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। আমাদের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের পর স্থানীয় আওয়ামী নেতারা একটি অটোরিকশা এনে সেটা জ্বালিয়ে দেন। এ ঘটনায় তারা আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করতে পারেন।’
মোজাদ্দেদ আলী বাবু রিখিত বক্তব্যে দাবি করেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি, কেরানীগঞ্জ দক্ষিণ থানায় আমাদের ৮৪ জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে। কেরানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে এই হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সেই সঙ্গে আমাদের নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি।’
সংবাদ সম্মেলনে এ সময় উপস্থিত ছিলেন কৃষকদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি ও ঢাকা জেলা বিএনপিনেতা নাজিম উদ্দীন মাস্টার, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা বিএনপির সহসভাপতি ওমর শাহ নেওয়াজ, সহসভাপতি আলী হোসেন আলী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোশারেফ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক ঈশা খান প্রমুখ।