ঘাটে-সড়কে বাড়ছে ব্যক্তিগত গাড়ি ও মোটরসাইকেলের চাপ
বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পাটুরিয়া ও শিমুলিয়া ফেরি ঘাট দুটিতে বাড়ছে ব্যক্তিগত ও ভাড়া করা গাড়ির চাপ। এর সঙ্গে বেড়েছে মোটরসাইকেলে করে ঘরমুখোদের সংখ্যা। দুই এলাকার সব কয়টি ঘাটে ধীরে ধীরে লম্বা হচ্ছে যানবাহনের সারি।
এদিকে, পণ্যবাহী যান পারাপার বন্ধ থাকায় দীর্ঘ হচ্ছে ট্রাকের সারি। অন্যদিকে, ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে এখনও যান চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও বিকেলের পর থেকে ভোগান্তির আশঙ্কা রয়েছে।
এনটিভি অনলাইনের মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি আহমেদ সাব্বির সোহেল জানান, পাটুরিয়া ঘাটে গত কয়েক দিনের তুলনায় আজ যানবাহনের চাপ বেশি। বেলা যত বাড়ছে, ততই বাড়ছে এর সংখ্যা। জমতে থাকা যানবাহনের মধ্যে বেশি দেখা যাচ্ছে প্রাইভেট কার ও মাইক্রোবাস। এর বেশির ভাগই ব্যক্তিগত বলে জানা যায়। তবে, অনেকে ঢাকা থেকে ভাড়া করে ছোট এ সব যানবাহনে করে ঘরে ফিরছেন বলে জানান।
বেলা ১২টা পর্যন্ত ঘাটটিতে নদী পারের অপেক্ষায় দেখা যায় তিন শতাধিক ব্যক্তিগত গাড়ি। এ সময় ৫০ থেকে ৬০টি বাস ছিল। যানবাহন পারাপারের জন্য আজ বৃহস্পতিবার এ রুটে ২০টি ফেরি চলাচল করছে।
বিআইডব্লিউটিসি’র আরিচা কার্যালয়ের ডিজিএম খালেদ নেওয়াজ জানান, ২০টি ফেরি দিয়ে ঈদযাত্রায় যানবাহন ও যাত্রী পারাপার করা হচ্ছে। যতটা সম্ভব যাত্রীরা যেন দুর্ভোগ ছাড়াই নদী পার হতে পারেন, সেদিকে লক্ষ্য রেখে ফেরি চলাচল পরিচালনা করা হচ্ছে।
এদিকে, আমাদের মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি মঈনউদ্দিন সুমন জানান, সরকারি কর্মজীবীদের শেষ কর্মদিবসে আজ বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে ঈদযাত্রায় শিমুলিয়া ফেরি ঘাটে মানুষের ঢল নামতে শুরু করেছে। বাড়তে শুরু করেছে ব্যক্তিগত ছোট ছোট যানবাহনের চাপ।
ভোগান্তির শিকার হলেও ফেরিতে উঠতে পারায় খুশি যাত্রীরা। ঈদে স্বজনদের কাছে পেতেই যেন আনন্দিত তাঁরা।
মিরপুরের মো. রহিম মিয়া ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে মাওয়াঘাটে এসেছেন, যাবেন বরিশালে। ভোর ৫টায় বাসা থেকে রওনা হয়েছে ঘাট এলাকায় তিন ঘণ্টা ধরে অপেক্ষা করছেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, সিরিয়াল ভাঙছেন কেউ কেউ। এতে আরও দেরি হচ্ছে। তবে বাড়ি যেতে পারছেন, এতে তিনি খুশি।
সালেহা বেগম একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। ঢাকায় বসবাস। যানজট এড়াতে খুব সকালে রওনা হন মাওয়ার দিকে। তিনি বলেন, ‘শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে ঈদ করতে খুলনায় যাচ্ছি। একটু কষ্ট হলেও ভালো লাগছে। সবার সঙ্গে ঈদ করব।’
পিকআপচালক রহিম মিয়া বলেন, ‘ভোর থেকে কোনো পিকআপ ফেরিতে উঠতে দেয়নি। আমি রাত ১২টায় এসেছি। এখনও সিরিয়াল পাইনি। কখন পাব জানি না।’
বিআইডব্লিউটিএ শিমুলিয়া ঘাটের নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী পরিচালক মো. শাহাদাত হোসেন জানান, ফেরির জন্য দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করে মানুষ লঞ্চ স্পিডবোটে যাতায়াত করছে। ভোর থেকে ১৫৩টি স্পিডবোট ও ৮৩টি লঞ্চ চলাচল করছে।
বিআইডব্লিউটিসি’র শিমুলিয়া ঘাটের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো. ফয়সাল বলেন, ‘বর্তমানে নয়টি ফেরি পারাপারে কাজ করছে। বাংলাবাজার নৌরুটে পাঁচটি ও মাঝিরকান্দা নৌরুটে তিনটি ফেরি চলাচল করছে। ঈদকে কাছাকাছি হওয়ার পাশাপাশি যাত্রী সংখ্যা বাড়ছে। ফলে যান পারাপার সঠিক সময়ে করা হলেও ঘাটে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে।’
এনটিভি অনলাইনের গাজীপুর প্রতিনিধি নাসির আহমেদ জানান, গাজীপুরের ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের চাপ বাড়তে শুরু করছে। তবে এ রুটে যানবাহন চলাচল এখনও স্বাভাবিক রয়েছে। তবে, আজ বিকেল থেকে চাপ বাড়তে পারে। কারণ, এ সময় কিছু কিছু শিল্পকারখানা ছুটি হলে যাত্রীর সংখ্যা বাড়তে পারে।