ঘুমের ওষুধে অচেতন করে স্বামীকে হত্যা, স্ত্রীর স্বীকারোক্তি
মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলায় স্বামীকে দুধের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার একমাস ১১ দিন পর স্বামী হত্যার দায় স্বীকার করেছেন নিহতের স্ত্রী রুবি বেগম (২৩)। ঘটনাটি ঘটেছে কালকিনি উপজেলার পূর্ব এনায়েতনগর এলাকার পূর্ব আলীপুর গ্রামে।
পুলিশ ও ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, কালকিনির পূর্ব এনায়েতনগর এলাকার পূর্ব আলীপুর গ্রামের মান্নান কাজীর ছেলে নাজিমুদ্দিন কাজীর (২৫) সঙ্গে একই এলাকার কামাল সিকদারের মেয়ে রুবি বেগমের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। তাদের সংসারে চার বছর বয়সের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। কিন্তু গত ২১ জুন রাতে স্বামী নাজিমুদ্দিন স্ট্রোক করে মারা যান বলে এলাকায় প্রচার করেন স্ত্রী রুবি বেগম। করোনার প্রকোপের কারণে তড়িঘড়ি করে তার লাশ স্বাভাবিক মৃত্যু হিসেবে দাফন করা হয়। নিহতের বাবা-মা নেই।
পুলিশ আরও জানান, তবে নিহতের অন্য আত্মীয়দের সন্দেহ হয়। তাদের ধারণা, পরকীয়ার জের ধরেই তাকে হত্যা করা হয়েছে। গত শনিবার নাজিমুদ্দিনের ফুফু মতি বেগম থানায় মামলা করার জন্য গেলে কালকিনি থানা পুলিশ মামলা না নিয়ে তাদের মাদারীপুর আদালতে গিয়ে মামলা করতে বলেন।
গতকাল রোববার বিকেলে স্থানীয় এলাকাবাসীর তোপের মুখে এ হত্যার দায় স্বীকার করেন রুবি বেগম।
বিষয়টি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রেহানা নেয়ামুলের স্বামী নেয়ামুল আকন কালকিনি থানা পুলিশকে অবহিত করেন। পরে পুলিশ সন্ধ্যার পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে স্ত্রী রুবি বেগমকে আটক করে।
রুবি বেগম স্বীকারোক্তিতে জানান, আলীপুর মোল্লারহাট বাজারের ওষুধের দোকানের চিকিৎসক আব্দুল আলীর কাছ থেকে ঘুমের ওষুধ এনে দুধের সঙ্গে মিশিয়ে নাজিমুদ্দিনকে খাইয়ে অচেতন করে হত্যা করা হয়।
নিহতের ভাই নাইম ও ফুফু মতি বেগম বলেন, আমাদের আগেই সন্দেহ হয়েছিল নাজিমুদ্দিন মারা যায়নি, তাকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা থানায় মামলা করতে গেলে থানা পুলিশ মামলা নেয়নি। আমাদের মাদারীপুর আদালতে গিয়ে মামলা দিতে বলে। পরে এলাকার লোকজন নিয়ে রুবিকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে রুবি ঘুমের ওষুধ খাইয়ে হত্যা করেছে বলে স্বীকার করেন।
এ ব্যাপারে কালকিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইশতিয়াক আশফাক রাসেল বলেন, ‘ভুক্তভোগী পরিবার গতকাল রোববার রাতে থানায় হত্যা মামলা করেছে। জিজ্ঞাসাবাদে স্বামীকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন রুবি বেগম। পরে তাকে গ্রেপ্তার করে সোমবার সকালে মাদারীপুর জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।’