চট্টগ্রামে ২৪ ঘণ্টায় শহরের চেয়ে গ্রামে করোনা শনাক্ত বেশি
চট্টগ্রামে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় শহরের চেয়ে গ্রামে বেশি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্তের হারও বেড়েছে। এ সময়ের মধ্যে এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়, নগরীর সাতটি এবং কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে গতকাল শনিবার চট্টগ্রামের ৬৪২ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষায় নতুন পজিটিভ ১৩৬ জনের মধ্যে শহরে ৬৭ জন এবং ১১ উপজেলায় ৬৯ জন। সংক্রমণ হার ২১ দশমিক ১৮ শতাংশ। ফলে জেলায় মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৫৫ হাজার ৯৮১ জনে। এর মধ্যে শহরের বাসিন্দা ৪৪ হাজার ১০০ জন এবং গ্রামের ১১ হাজার ৮৮১ জন। উপজেলা পর্যায়ে আক্রান্তদের মধ্যে সর্বাধিক ফটিকছড়িতে ৩০ জন, সীতাকুণ্ডে ১৩ জন, মিরসরাইয়ে ১০ জন, হাটহাজারীতে চার জন, বাঁশখালী ও পটিয়ায় তিন জন করে, রাঙ্গুনিয়ায় দুজন এবং রাউজান, লোহাগাড়া, আনোয়ারা ও চন্দনাইশে একজন করে রয়েছে।
চট্টগ্রামে গতকাল করোনায় শহরের একজন মারা গেছে। এতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে এখন ৬৫৭ জন হয়েছে। এর মধ্যে শহরের বাসিন্দা ৪৬০ জন ও গ্রামের ১৯৭ জন। এ ছাড়া সুস্থতার ছাড়পত্র নিয়েছেন ১৩৮ জন। ফলে মোট আরোগ্যলাভকারীর সংখ্যা ৪৭ হাজার ৮৬৭ জনে উন্নীত হয়েছে। এর মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি ছিল ছয় হাজার ২৪৭ জন এবং ঘরে থেকে চিকিৎসায় সুস্থ হয় ৪১ হাজার ৬২০ জন। হোম আইসোলেশনে নতুন যুক্ত হয় ২৫ জন এবং ছাড়পত্র নেন ৩৮ জন। বর্তমানে হোম আইসোলেশনে রয়েছে এক হাজার ১২৮ জন।
গতকাল একজনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে এ মাসের প্রথম ১৯ দিনে করোনায় মৃতের সংখ্যা এখন ৩৫ জন। এ মাসে সর্বাধিক চার জন মারা যায় ১৭ জুন। তিন জন করে মারা যায় পাঁচদিন। মৃত্যুশূন্য ছিল তিন দিন। করোনার সর্বোচ্চ সংক্রমণ হার রেকর্ড হয় ১৩ জুন—২৪ দশমিক ৫৯ শতাংশ। এদিন মাসের সর্বাধিক ২২৫ জনের নমুনায় জীবাণুর উপস্থিতি শনাক্ত হয়। গতকালের সংক্রমণ হার এ মাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এক দিনে সবচেয়ে কম আক্রান্ত শনাক্ত হয় ৬ জুন—৬০ জন। সংক্রমণ হার ছিল ১৩ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। মাসের সর্বনিম্ন ৯ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ সংক্রমণ হার রেকর্ড হয় ১২ জুন।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, ফৌজদারহাটে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) ল্যাবে ৩৪০ জনের নমুনা পরীক্ষায় শহরের ১৯ ও গ্রামের ৪৭ জন জীবাণুবাহক পাওয়া যায়। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) ল্যাবে ৬৭ জনের নমুনার মধ্যে গ্রামের দুজনসহ ১৬ জন আক্রান্ত শনাক্ত হয়। নগরীর একমাত্র বিশেষায়িত কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্র আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের আরটিআরএল-এ পরীক্ষিত ২৭টি নমুনায় ১০টির ফল পজিটিভ আসে। এরা সবাই শহরের বাসিন্দা। পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১০ জনের নমুনার মধ্যে একটিতে ভাইরাসের উপস্থিতি চিহ্নিত হয়।
বেসরকারি ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরির মধ্যে শেভরনে ৮৭টি নমুনা পরীক্ষা করা হলে গ্রামের তিনটিসহ আটটি, মা ও শিশু হাসপাতাল ল্যাবে ২৭টি নমুনায় শহরের চার এবং গ্রামের ছয়টি, এপিক হেলথ কেয়ারে ৩৯টি নমুনার মধ্যে শহরের ১৫ এবং গ্রামের সাতটিতে করোনার জীবাণু থাকার প্রমাণ মেলে। এদিন চট্টগ্রামের ৪৫ জনের নমুনা কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে পাঠানো হয়। পরীক্ষায় গ্রামের তিনটির পজিটিভ এবং অবশিষ্টগুলোর ফলাফল নেগেটিভ আসে।
তবে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি), ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু), ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল ও মেডিকেল সেন্টার ল্যাবে কোনো নমুনা পরীক্ষা করা হয়নি।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট পর্যবেক্ষণে বিআইটিআইডি’তে ১৯ দশমিক ৪১ শতাংশ, চমেকে ২৩ দশমিক ৮৮, আরটিআরএলে ৩৭ দশমিক শূন্য ৪, পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১০ শতাংশ, শেভরনে ৯ দশমিক ১৯, মা ও শিশু হাসপাতালে ৩৭ দশমিক শূন্য ৪, এপিক হেলথ কেয়ারে ৫৬ দশমিক ৪১ এবং কক্সবাজার মেডিকেল ল্যাবে ৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ সংক্রমণ হার নির্ণিত হয়।