চাঁদপুরে আলুর বাম্পার ফলন
বৃষ্টিসহ নানা শঙ্কার মধ্যেও চাঁদপুরে চলতি মৌসুমে আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। বাম্পার ফলন হওয়ায় আলুচাষিদের মুখে ফুটেছে হাসি।
ইতোমধ্যেই চাষিরা তাদের আলু তোলা শুরু করেছেন। গণ্ডাপ্রতি ১৫ থেকে ১৮ মণ আলু উৎপাদন হয়েছে বলে জানিয়েছেন চাষিরা। বিগত বছরের চেয়ে এ বছর আলুর ফলন অনেক ভালো হয়েছে। তাই তাদের আলু চাষে আগ্রহ অনেক বেড়ে গেছে। ফসলের ক্ষেত থেকে বস্তাভরে হিমাগারে পাঠাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলার কৃষকরা।
এ বছর চাঁদপুর জেলায় নয় হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। লোকসান ও বৃষ্টিজনিত কারণে সাত হাজার ১৪০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে।
এ ছাড়া চাঁদপুরে ১২টি হিমাগারে ৭০ হাজার মেট্রিক টন আলু সংরক্ষণ করার ক্ষমতা রয়েছে।
চাঁদপুর জেলা একটি নদীবিধৌত কৃষিভিক্তিক অঞ্চল বিধায় কৃষকরা সময়মতো চাষাবাদ, বীজবপন ও সঠিক পরিচর্যায় পারদর্শী। জেলার ব্যাংকগুলো যথারীতি ফসলি ঋণ প্রদান করে কৃষিপণ্য উৎপাদনে ব্যাপক সহায়তা দিচ্ছে। চাঁদপুরের সঙ্গে নৌ, সড়ক ও রেলপথের ভালো যোগাযোগ ব্যবস্থা থাকায় দেশের সর্বত্র কৃষিপণ্য পরিবহণ খুবই সহজ ও নিরাপদ। জেলার আট উপজেলায় বিভিন্ন জাতের আলু চাষাবাদ করে থাকে কৃষকরা। কমবেশি সব উপজেলায়ই আলুর ফলন ও চাষাবাদ হয়ে থাকে। কয়েক বছর ধরেই চাঁদপুরে ব্যাপক আলু উৎপাদন হচ্ছে। চাঁদপুর আলু উৎপাদনে দেশের মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে।
চাঁদপুর সদর উপজেলার সফরমালী এলাকার আলুচাষি মো. মিজান খান ও শরিফ বেপারী বলেন, বৃষ্টির চিন্তায় অনেকে এবার আলুচাষ করেনি। আমরা যারা আলুচাষ করেছি, সবাই শঙ্কার মধ্যে ছিলাম। কারণ গত বছর বৃষ্টিতে আমাদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আল্লাহর দয়ায় এ বছর আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। আশা করি গত বছরের লোকসান এ বছর পুষিয়ে নেওয়া যাবে।
পরিবহণ মালিক বাদল মজুমদার বলেন, ফসলের মাঠ থেকে আলু কিনে বাজার পর্যন্ত নিতে ব্যয় বেড়ে যায়। চাষি থেকে যে আলু কেনা হয়, পরিবহণ খরচ বাড়ার কারণে বাজারে আলুর দাম বেড়ে যায়। পথে পথে চাঁদা এবং টোলের কারণে আমাদের খরচ বেড়ে যাচ্ছে। ফলে কৃষকের কাছ থেকে কমদামে আলু কেনা সত্ত্বেও বাজারে আলু বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। সরকার পরিবহণের সুযোগ সুবিধা বাড়ালে কৃষকও লাভবান হবেন, আমরাও হব।
চাঁদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. জালাল উদ্দিন বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর আলুর ফলন ভালো। কৃষকরা আলু বিক্রি করে লাভবান হবে। ভবিষ্যতে আলুর আবাদে আবারও লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে। জেলায় এ বছর প্রতি হেক্টর জমিতে ২০ টন করে মোট এক লাখ ৪২ হাজার ৮০০ টন আলু উৎপাদন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ ছাড়া কৃষকদের মধ্যে বিএডিসির মাধ্যমে ন্যায্যমূল্যে আলুবীজ সরবরাহের নিশ্চিত করছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।