চাঁদপুরে কিশোরীকে ধর্ষণ ও গর্ভপাতের অভিযোগে আটক ৪
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে জোরপূর্বক এক কিশোরীকে (১৪) ধর্ষণ ও গর্ভপাতের ঘটনায় ধর্ষকসহ চারজনকে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল বুধবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে হাজীগঞ্জ পৌরসভার মকিমাবাদ এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়।
আজ বৃহস্পতিবার পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মো. মিলন মাহমুদ।
আটক হওয়া ব্যক্তিরা হলেন ধর্ষক মো. সিরাজুল ইসলাম, তার মেয়ে মোছাম্মদ বকুল বেগম, ছেলের বউ সীমা আক্তার ও জোরপূর্বক গর্ভপাতের দায়ে অভিযুক্ত ইসলামিয়া মডেল হাসপাতালের আয়া নাজমা বেগম।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ধর্ষক মো. সিরাজুল ইসলাম ভুক্তভোগী কিশোরীর দূর সম্পর্কের নানা হন। সেই সুবাদে তিনি প্রায় সময়ই ওই কিশোরীর বাড়িতে আসা-যাওয়া করতেন।
পুলিশ সুপার জানান, গত কিছুদিন ধরে ওই কিশোরীর শারীরিক পরিবর্তন ঘটে। তার মা প্রথমে বিষয়টি লক্ষ্য করেন। পরে মায়ের জিজ্ঞাসাবাদে সে বিস্তারিত জানায়।
কিশোরীর বাবা খুব ভোরে ঢালাইয়ের কাজ করতে বাইরে গেলে এবং মা ডায়াবেটিস রোগী হওয়ায় বাইরে হাঁটতে যাওয়ার সুযোগে সিরাজুল ইসলাম তাদের ঘরে আসে এবং গত বছরের ১০ অক্টোবর তাকে বিভিন্ন উপহার সামগ্রীর প্রলোভন দেখিয়ে প্রথম ধর্ষণ করেন এবং কাউকে কিছু না বলার জন্য হুমকি দেন। এভাবে তিনি বিভিন্ন সময়ে ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করেন। এতে ওই কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে।
পরে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য ধর্ষক সিরাজের মেয়ে বকুল ও তার ছেলের বউ সীমা ওই কিশোরীকে ইসলামিয়া মডেল হাসপাতালে আল্ট্রাসনো করে জানতে পারে সে ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা। পরে ওই হাসপাতালে আয়া নাজমা বেগমের সহায়তায় গর্ভপাতের পরিকল্পনা করে। গত ২৩ মার্চ ধর্ষক সিরাজের মেয়ে বকুলের মকিমাবাদের ভাড়া বাসায় গর্ভপাত করানো হয়। পরে নবজাতক শিশুর মরদেহ ডাস্টবিনে ফেলে দেয়। বিষয়টি গোপন সংবাদের মাধ্যমে পুলিশ জানতে পেরে অভিযান পরিচালনা করে প্রথমে মেয়ে বকুল, ছেলের বউ সীমা আক্তারকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পরে তাদের এবং ধর্ষিতার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির ভিত্তিতে ধর্ষক সিরাজুল ইসলাম ও আয়া নাজমা বেগমকে আটক করে পুলিশ।
পরে আসামিদের স্বীকারোক্তিতেই হাজীগঞ্জ পৌরসভার ৪নং ওয়ের্ডের মকিমাবাদ এলাকার ময়লার স্তূপ থেকে নবজাতকের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ জানান, আমরা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারি, হাজীগঞ্জের একটি বাসায় এই ধরনের একটি অবৈধ গর্ভপাত করানো হয়েছে। সেই সংবাদের ভিত্তিতে হাজিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুবায়ের সৈয়দ বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে তাদের আটক করেন। আসামিদের বিরুদ্ধে ভ্রুণ হত্যা ও ভ্রুণ হত্যায় সহযোগিতার অভিযোগে মামলা করা হবে।