চাঁদাবাজি করতে গিয়ে হাতেনাতে আটক, ঢাবির ৩ ছাত্রলীগকর্মী কারাগারে
কাভার্ডভ্যান আটকে চাঁদা দাবি করে টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্রলীগের তিন কর্মীকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠিয়েছে শাহবাগ থানা পুলিশ। গতকাল রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) তাঁদের আদালতে পাঠানো হয়। বিষয়টি এনটিভি অনলাইনকে নিশ্চিত করেছেন শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুর মোহাম্মদ।
গত শনিবার দিনগত রাত ৩টার দিকে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে চাঁদাবাজির সময় তাদের হাতেনাতে ধরে ফেলে পুলিশ।
ওই তিন ঢাবি ছাত্র হলেন হাজি মুহম্মদ মুহসীন হলের আবাসিক ছাত্র (ম্যানেজমেন্ট বিভাগ) মো. রাহাত রহমান, বিজয় একাত্তর হলের আবাসিক ছাত্র (থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগ) ফজলে নাবিদ শাকিল এবং সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাদিক আহাম্মদ। তারা সবাই ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
গ্রেপ্তার হওয়া তিন জনই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। তাদের রাজনৈতিক কোনো পদ-পদবি না থাকলেও তাঁরা ছাত্রলীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে থাকেন। তাঁদের মধ্যে শাকিল ও সাদিক ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের ও রাহাত রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের অনুসারী।
জানা যায়, গত শনিবার রাতে ওই তিন ঢাবি ছাত্র একটি কাভার্ডভ্যান আটকে চালককে ভয় দেখিয়ে তাঁর কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। এরপর চালকের কাছ থেকে জোরপূর্বক ১৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিলে তিনি চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করেন। এ সময় টহলরত পুলিশ অভিযুক্তদের ধরে ফেলে এবং শাহবাগ থানায় নিয়ে যায়।
গ্রেপ্তার করা তিন জনকে আজ সোমবার সিএমএইচ আদালতে তোলা হয়। সেখানে বাদী পক্ষ উপস্থিত না থাকায় মামলার শুনানি পিছিয়ে আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি ধার্য করা হয়।
তাঁদের তিন জনের ছাত্রলীগের সঙ্গে সম্পৃক্ততার ব্যাপারে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘তারা কেবল সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র। তারা তো ছাত্রলীগের পোস্টধারী কেউ না। সো এরা ছাত্রলীগের কেউ না। আমাদের কর্মসূচিতে তো অনেকেই আসে, এতজনের মধ্যে সবাইকে তো আইডেন্টিফাই করা সম্ভব নয়। আর তাদের পদ থাকলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া যেত।’
শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান আরও বলেন, ‘অপরাধ করে থাকলে এরা অপরাধী। এ ধরনের অপরাধকারীদের তো কোনো ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই। পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে যেহেতু সেহেতু আমাদের পক্ষ থেকে তাদের বিরুদ্ধে প্রমাণ সাপেক্ষে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান থাকবে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমি খোঁজ নিয়ে দেখেছি, তাদের মধ্যকার কেউই আমার অনুসারী নয় এবং তাদের কারোরই ছাত্রলীগের সঙ্গে সম্পৃক্ততা নেই।’
এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, ‘আমি জেনেছি, অপরাধমূলক কাজ করার সময় তিনজনকে পুলিশ হাতেনাতে ধরেছে। আমি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বিষয়টি ভালোভাবে খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বলেছি।’
গ্রেপ্তারকৃতদের ব্যাপারে শাহবাগ থানার ওসি নুর মোহাম্মদ বলেন, ‘গত পরশুদিন (শনিবার) দিবাগত রাতে কাভার্ডভ্যান আটকিয়ে টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় বাদীপক্ষের মামলার ভিত্তিতে তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে গতকাল আদালতে পাঠানো হয়েছে।’