চাঁদার ভাগবাটোয়ারার দ্বন্দ্বে যুবলীগকর্মী খুন, গ্রেপ্তার ৩
দলীয় আধিপত্য, আন্তকোন্দল ও চাঁদার ভাগবাটোয়ারার বিরোধে খুন হয়েছেন যুবলীগকর্মী শরীফ চৌধুরী শান্ত (২১)। এ ঘটনায় জড়িত এজাহার নামীয় প্রধান আসামিসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জব্দ করা হয়েছে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দুটি চাকু ও মোবাইল ফোনসেট।
আজ শনিবার দুপুর ১২টায় নিজ সভাকক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এই খবর নিশ্চিত করেছেন ময়মনসিংহ পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস।
গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন- প্রধান আসামি মো. রাকিবুল হাসান তপু (২৫), মো. শান্ত ইসলাম (২০) ও মো. আরিফুজ্জামান আরিফ (২২)।
গতকাল শুক্রবার নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা থানা এলাকার ভিন্ন ভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়।
পিবিআই জানায়, হত্যাকাণ্ডের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আসামি শনাক্ত ও তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এর আগে গত ৬ এপ্রিল রাত ১২টার দিকে শহরের চরপাড়া এলাকায় যুবলীগকর্মী শরীফ চৌধুরী শান্তকে (২১) কুপিয়ে হত্যা করা হয়। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, প্রধান আসামি মো. রাকিবুল হাসান তপু একাই প্রায় দুই মিনিট ধরে শরীফকে ধারালো ছোরা দিয়ে শরীরের প্রায় ১৮টি আঘাত করে। ফলে ঘটনাস্থলেই মারা যান শরীফ। এর আগে শরীফের বাবা শহীদুল ইসলাম চৌধুরী বাদী হয়ে গ্রেপ্তার হওয়া তিনজনসহ চারজনের নামে কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা করেন। পরে মামলাটি অধিগ্রহণ করে ময়মনসিংহ পিবিআই।
পিবিআই পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস জানান, নিহত ও গ্রেপ্তারকৃতরা একই গোষ্ঠীভুক্ত। ঘটনার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন, সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ, পর্যালোচনা ও আসামি শনাক্ত করে পিবিআই।
গৌতম কুমার বিশ্বাস বলেন, আসামি শনাক্তের পর পিবিআই ময়মনসিংহ জেলার চৌকস একটি তদন্তদল পিবিআই হেডকোয়ার্টার্সের এলআইসি শাখার সহায়তায় দ্রুততম সময়ে আসামিদের অবস্থান নির্ণয়ে সমর্থ হয়। কিন্তু আসামিরা ক্ষণে ক্ষণে তাদের অবস্থান বদলসহ নিজেদের গোপন করার চেষ্টা করে। কিন্তু পিবিআই দল ৮ এপ্রিল ভোর সাড়ে ৪টায় নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা থানা এলাকার ভিন্ন ভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে আসামিদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
গৌতম কুমার বিশ্বাস আরও বলেন, গ্রেপ্তারের পর পিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা জানায়, নিহত শরীফ চৌধুরী ও আসামিরা পরস্পর বন্ধু এবং এলাকায় একত্রে চলাচল করত। তারা চরপাড়া এলাকার ফুটপাথের অস্থায়ী দোকান থেকে সাপ্তাহিক চাঁদা সংগ্রহ করত। নিহত শরীফ ১০-১৫ দিন আগে বন্ধু-বান্ধব ত্যাগ করে আলাদা গ্রুপ তৈরি করে এবং চাঁদা আদায়ে নিজের আধিপত্য বজায় রাখে। চাঁদার ভাগ পেতে অন্যদেরও তার সাথে যোগ দিতে বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। ফলে আসামিরা তার উপর প্রতিশোধ পরায়ণ হয়ে ওঠে ও হত্যা করে। এই হত্যাকাণ্ডে পাঁচ জন জড়িত বলে আসামিরা জানায়। ঘটনার সাথে জড়িত অপর দুই জন আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।
গ্রেপ্তার হওয়া আসামি আরিফুজ্জামান আরিফের দেখানো জায়গা উপজেলার পরানগঞ্জ ভাটিপাড়ায় তার বাড়ির পেছনের খড়ের গাদা থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দুটি চাকু আলামত হিসেবে জব্দ করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সব আসামি ঘটনার সঙ্গে তাদের সরাসরি সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে বলেও জানান পিবিআই পুলিশ সুপার।