চার কোটি টাকা দুবাইয়ের পাচার, হুন্ডিচক্রের ৩ জন গ্রেপ্তার
দেশে এখনো সক্রিয় হুন্ডিচক্র। চার মাসে একটি চক্রই দুবায়ে পাচার করেছে কয়েক কোটি টাকা। চক্রের হোতা থাকেন সেদেশে। আর এদেশ থেকে অনলাইনের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে অধিক লাভের প্রলোভনে প্রতারণা করেন তার সাঙ্গপাঙ্গ। এই অপরাধে জড়িয়ে পড়েছেন নারীরাও। অবশেষে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) হাতে ধরা পড়েছে এই চক্রের দুই নারীসহ তিন সদস্য।
সিআইডি সাইবার স্টেশনের বিশেষ পুলিশ সুপার এস এম আশরাফুল আলম আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান।
এস এম আশরাফুল জানান, বাংলাদেশে এজেন্ট নিয়োগ করে বিপুল টাকা হুন্ডির মাধ্যমে পাচার করে চক্রটি। সিআইডির সাইবার মনিটরিং শাখা বরিশাল জেলায় অভিযান চালিয়ে এই চক্রের তিনজন বাংলাদেশি এজেন্টকে গ্রেপ্তার করেছে। তারা মাত্র চার মাসের মধ্যে কয়েক কোটি টাকা হুন্ডির মাধ্যমে দুবাইয়ে পাচার করেছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—রনি খান, আরজু আক্তার এবং তাসনিম রহমান। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে চারটি মোবাইল, তিনটি বিকাশ, নগদ এজেন্টের সিম, বিভিন্ন ব্যাংকের কয়েকটি চেক বই এবং এক লাখ ২৮ হাজার ৬৩০ টাকা জব্দ করা হয়।
সিআইডি জানায়, সিলেট সাইট নামের অনলাইন ইনভেস্টমেন্ট ব্যবসায় সাধারণ মানুষকে বিপুল টাকা আয়ের প্রলোভন দেখায়। পরে মানুষের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করে প্রথম দিকে কিছু মুনাফা দিতেন তারা। এর পর আরও বেশি টাকার বিনিয়োগ সংগ্রহ করে সিলেট সাইট নামের ওয়েবসাইট ডিজেবল করে দেয়। এভাবে ডিজিটাল প্রতারণার মাধ্যমে বিপুল টাকা আত্মসাৎ করেছেন তারা। এই কাজে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এজেন্ট নিয়োগ করে নগদ, বিকাশ অথবা ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে তারা টাকা সংগ্রহ করতেন।
সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টারের কাছে এমন তিনটি অভিযোগ আসে। এ ছাড়া রাজধানীর প্রেসক্লাবের সামনে গত ২৭ জুলাই সিলেট সাইটের প্রতারণায় ভুক্তভোগীরা একটি মানববন্ধনও করেন।
গ্রেপ্তারকৃতদের বরাত দিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসএম আশরাফুল আলম বলেন, ‘এই চক্রের প্রধান হোতা আশিক ও তার স্ত্রী সানজিদা। তারা দুবাইয়ে বসবাস করছেন। গত চার মাসের মধ্যে তারা চার কোটি টাকারও বেশি আত্মসাৎ করেছে।’
গ্রেপ্তারকৃতদের বরাত দিয়ে সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার বলেন, ‘এই চক্রের সদস্যরা বিকাশ, নগদ, এজেন্ট ও ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে টাকা সংগ্রহ করত। পরে সেই টাকা দুবাই প্রবাসী আশিক ও তার স্ত্রী সানজিদার নির্দেশে বিভিন্ন ব্যাংকের হিসাবে জমা করে দিত। তাদের কাছ থেকে জব্দ করা মোবাইলে ব্যাংকে জমা দেওয়ার রশিদ থেকে এই তথ্য পাওয়া যায়।
সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার আজাদ রহমান, সাইবার পুলিশ স্টেশনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ রাজিবুল আলম এবং সাইবার পুলিশ স্টেশনের সহকারী পুলিশ সুপার কাজী আবু সাঈদ উপস্থিত ছিলেন।