চার চিকিৎসকে চলছে পোরশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
জনবল সংকটে নওগাঁর পোরশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ১১ চিকিৎসকের সাতটি গুরুত্বপূর্ণ পদই শূন্য। মাত্র চারজন চিকিৎসকের পক্ষে পোরশা উপজেলার প্রায় দেড় লক্ষাধিক মানুষের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা দুস্কর হয়ে পড়েছে।
নওগাঁর পোরশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১৯৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়ে উপজেলাবাসীকে বিভিন্ন সেবা দিয়ে আসছে। এটি ৩১ শয্যাবিশিষ্ট হলেও ২০১১ সালে ৫০ শয্যার প্রশাসনিক অনুমোদন পায়। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ২০১০ সালে ৫০ শয্যাবিশিষ্ট নতুন ভবনটির ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেন। তবে ভবনের অনুমোদন থাকলেও জনবলের কোনো অনুমোদন নেই।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে ১০২ জন চিকিৎসক-কর্মচারীর বিপরীতে ৭৪ জন কর্মরত আছেন। শূন্য পদ আছে ২৮টি। ১১টি চিকিৎসকের পদ থাকলেও মাত্র চারজন চিকিৎসক দিয়ে চলছে পোরশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। আধুনিক অপারেশন থিয়েটারসহ আরও অনেক আধুনিক সুযোগ-সুবিধা থাকার পরও জনবল সংকটের কারণে তা চালু করা সম্ভব হচ্ছে না।
জুনিয়র কনসালটেন্ট (গাইনি অ্যান্ড অবস) একজন, জুনিয়র কনসালটেন্ট (মেডিসিন) একজন, জুনিয়র কনসালটেন্ট (সার্জারি) একজন, জুনিয়র কনসালটেন্ট (এনেসথেশিয়া) একজন, জুনিয়র কনসালটেন্ট (শিশু) একজন, জুনিয়র কনসালটেন্ট (চক্ষু) একজন ও আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) একজনসহ আরও গুরুত্বপূর্ণ পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য আছে। অবিলম্বে এসব পদে চিকিৎসক নিয়োগ দিয়ে উপজেলার স্বাস্থ্যসেবা ত্বরান্বিত করা প্রয়োজন।
নওগাঁর পোরশা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মাহাবুব হাসান জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জেনারেটর ব্যবস্থা, ইসিজি, আলট্রাসনোগ্রাম চালু আছে। দুটি এক্স-রে মেশিন থাকলেও একটি নষ্ট অপরটি বৈদ্যুতিক সমস্যার কারণে চালানো সম্ভব হয় না। এজন্য গ্রামীণ জনপদের মানুষদের চরম দুর্দশার মধ্যে পড়তে হয়। পোরশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির পাশাপাশি এই উপজেলায় দুটি ইউনিয়ন সাব-সেন্টার চালু আছে। ইউনিয়ন সাব-সেন্টার দুটি হচ্ছে পোরশা ইউনিয়ন সাব-সেন্টার, যা জরাজীর্ণ অবস্থায় আছে। অন্যটি নোনাহার ইউনিয়ন সাব-সেন্টার।
এ ছাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি বিভিন্ন সেবার মধ্যে সাধারণ রোগীর সেবা, শিশু স্বাস্থ্যসেবা, গর্ভকালীন স্বাস্থ্যসেবা ও ফার্মেসি সেবাসহ অন্যান্য সেবা দিয়ে যাচ্ছে।
করোনা মহামারির মধ্যে মোট এক হাজার ৪৪৩টি করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। তার মধ্যে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে ২৩০ জন। সুস্থ হয়েছে ১৮৩ জন। মৃত্যু হয়েছে চারজনের। এদের তিনজন ৫০ বছরের ঊর্ধ্বে, একজন ৪৫ দিনের শিশুও আছে। উপজেলায় করোনা শনাক্তের হার ১৫ দশমিক ৯৪ শতাংশ।
করোনা রোগীদের জন্য সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী ও খাদ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে পোরশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সাপ্লাই সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। এতে পিছিয়ে পড়া দরিদ্র জনগোষ্ঠী শ্বাসকষ্টজনিত রোগীরা কিছুটা হলেও উন্নত সেবা পাবে। এমতাবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে জনবল সংকট দূর করে পিছিয়েপড়া জনগোষ্ঠীকে যথাযথ সেবার দাবি জানিয়েছে এলাকার সচেতন মহল ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।