চালের দোকান-আড়তে চলছে অভিযান, পালাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা
ভরা মৌসুমেও চালের দাম বেশির কারণ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিতে মন্ত্রিসভার নির্দেশের পর থেকেই পুরোদমে চলছে অভিযান। তবে, খাদ্য মন্ত্রণালয় ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের অভিযানের খবরে পালিয়ে যাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। যাদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে, তাদের দোকান-আড়তে মিলছে চালের দামে অসংগতি। ফলে আভিযানিক টিম করেছেন জরিমানা, আর পালিয়ে যাওয়া ব্যবসায়ীদের বিষয়ে পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
অভিযানসূত্রে জানা গেছে, আজ বুধবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে খাদ্য মন্ত্রণালয় অভিযান চালালে পালিয়ে যান অধিকাংশ চাল ব্যবসায়ীরা। গতকাল মোহাম্মদপুরের কৃষি মার্কেটে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর অভিযানে গেলে সেখানেও একই ঘটনা ঘটে।
আজ রাজধানীর মিরপুরে শাহ স্মৃতি মার্কেটের পাইকারি চালের আড়তে অভিযানে নেমেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অভিযান চালাচ্ছে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের টিম।
শাহ স্মৃতি মার্কেটে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিকাশ চন্দ্রের নেতৃত্বে শুরুতেই মেসার্স তাইয়্যেবা রাইস এজেন্সি নামের একটি আড়তে অভিযান চালানো হয়। সেখানে সরকারের বেধে দেওয়া দামের চেয়ে অতিরিক্ত দামে চাল বিক্রির রশিদ পায় অধিদপ্তর।
অভিযানের বিষয়ে ম্যাজিস্ট্রেট বিকাশ চন্দ্র বলেন, ‘মিরপুর ১ নম্বর এলাকার একটি বাজারে চালের আড়তে দুপুর থেকে আমাদের অভিযান শুরু হয়েছে। তাইয়্যেবা রাইস এজেন্সিতে যেসব চালের দাম বেশি, সেগুলোর দাম লেখা হয়নি। এ কারণে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।’
যদিও তাইয়্যেবা রাইস এজেন্সির প্রোপাইটার আতিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা বেশি দামে চাল কিনলেও অতিরিক্ত দামে বিক্রি করছি না। মূল্য তালিকায় কয়েকটি চালের দাম উল্লেখ করা হয়নি। এ কারণে আমাদের ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।’
এদিকে, রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অভিযান চালাচ্ছে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের টিম। অভিযানের খবর পেয়ে চাল ব্যবসায়ীদের অনেকে দোকানপাট ফেলে পালিয়েছেন। অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া খাদ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মর্জিনা আক্তার আজ বুধবার দুপুরে উপস্থিত সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন।
মর্জিনা আক্তার বলেন, ‘কারওরান বাজারে বিভিন্ন চালের আড়তে ব্যবসায়ীদের লাইসেন্সে গরমিল পাওয়া গেছে। গরমিল রয়েছে চালের মজুতেও। আমরা অভিযান শুরুর পর অনেক ব্যবসায়ী দোকান ফেলে পালিয়ে গেছেন।’
মর্জিনা আক্তার বলেন, ‘চাল ব্যবসায়ীদের লাইসেন্স আছে কি না, অনুমোদনের চেয়ে বেশি চাল মজুত আছে কি না, ফুড গ্রেইন লাইসেন্স যাচাই, খাদ্যশস্যের কেনাবেচার রশিদ, মিল গেটে কী মূল্যে চাল বিক্রি হচ্ছে, খুচরা-পাইকারি বিক্রেতার ক্যাশমেমো, খুচরা মূল্যতালিকা প্রদর্শন ইত্যাদি বিষয় যাচাই করছি আমরা।’
মর্জিনা আক্তার আরও বলেন, ‘আমরা অভিযান শুরুর পর অনেক ব্যবসায়ী দোকান ফেলে পালিয়ে গেছেন। যেসব ব্যবসায়ীরা আমাদের সহযোগিতা করছেন না, তাদের বিরুদ্ধে পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’