ছাত্রী ধর্ষণ মামলায় সহকারী অধ্যাপক কারাগারে
গোপালগঞ্জে ছাত্রীকে ধর্ষণ মামলায় সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজের ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক গোলাম মোস্তফাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। তাঁকে কলেজের প্রশাসনিক ও একাডেমিক কর্মকাণ্ড থেকেও অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. ওহিদ আলম লস্কর আজ মঙ্গলবার (৯ মে) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাবেদ মাসুদ জানান, গত ৭ মে রোবাবার দুপুরে সহকারী অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা উপজেলা পরিষদের সামনে শান্তিবাগ এলাকায় তাঁর বাসায় ডেকে নিয়ে আকে শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ করেন। পরে বিষয়টি ওই শিক্ষার্থী মা-বাবাকে জানালে তাঁর মা বাদী হয়ে সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ও পরিবারের লোকজন শিক্ষার্থীকে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে। চিকিৎসক তাঁর শারীরিক পরীক্ষা করে প্রাথমিকভাবে ধর্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
ওসি আরও জানান, অভিযোগটি গতকাল সোমবার বিকেলে সদর থানায় ধর্ষণ মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয় (মামলা নং-১৩)। পরে সন্ধ্যায় শহরের নবীবাগ এলাকার টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে থেকে অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়।
ওসি বলেন, ‘এ ঘটনার প্রধান অভিযুক্ত সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজের ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক গোলাম মোস্তফাকে আজ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। পরে ম্যাজিস্ট্রেট তাঁকে জেলা হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।’
কলেজের অধ্যক্ষ জানান, আজ উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে কলেজের স্টাফ কাউন্সিলের এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক গোলাম মোস্তফাকে কলেজ রোভার স্কাউট ইউনিটের সম্পাদকের পদ থেকে স্থায়ীভাবে, অনার্স প্রথম বর্ষ ভর্তি কমিটির সদস্য পদ ও কলেজের ইংরেজি বিভাগের সব দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
অধ্যক্ষ আরও বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নামাঙ্কিত গোপালগঞ্জ সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজে এমন একজন শিক্ষক কোনোভাবেই আমাদের কাম্য নয়। আমরা তা আশাও করি না। তিনি বিগত দিনগুলোতেও যা করেছেন এবং তাঁর এই ধারাবাহিক কার্যক্রমই এটা। হাজার হাজার শিক্ষার্থীর এই প্রতিষ্ঠানটিতে এমন আচরণ কখনও গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। তাঁকে কলেজ আর সইতে পারছে না। আমরা তাঁর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে এই দাবি জানাচ্ছি। দ্রুততম সময়ের মধ্যে তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে—এটিই আমাদের প্রত্যাশা।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে শহরের একাধিক শিক্ষার্থী ও শিক্ষক জানান, গোলাম মোস্তফার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানিসহ অসংখ্য নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ রয়েছে। এসব ঘটনায় তিনি একাধিকবার জরিমানা দিয়েছেন। গত বছর রোভার স্কাউটের একটি অনুষ্ঠানে ছাত্রীদের সঙ্গে নাচেন। বিষয়টি ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এ কারণে তিনি রোভার স্কাউটের জেলা সম্পাদকের পদ হারান। এত দিন লজ্জায় কেউ ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেনি। তাঁর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন গোপালগঞ্জ শহরের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।