ছাত্র-ব্যবসায়ী সংঘর্ষ : হেলমেটধারীদের খুঁজছে পুলিশ
ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী ও নিউ মার্কেটে ছাত্র-ব্যবসায়ীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় যাঁরা হেলমেট পরে ছিলেন, তাঁদের খুঁজছে পুলিশ। পুলিশের দাবি, হেলমেটধারীরাই কুরিয়ারকর্মী নাহিদ হোসেন ও দোকানি মোরসালিনকে কুপিয়ে বা আঘাত করে হত্যা করেছে।
এ ঘটনায় হেলমেটধারীদের কেউ আটক না হলেও কয়েক জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ এবং গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে থাকা ভিডিও ও ছবি দেখে হেলমেটধারীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। আর, সে সব ভিডিও-ছবির সূত্র ধরেই চলছে পুলিশের অনুসন্ধান।
পুলিশ বলছে, দেশীয় অস্ত্রসহ হেলমেটধারী ছিল দুপক্ষেরই। সংঘর্ষের সময় ঘটনাস্থল থেকেও একই চিত্র দেখা গেছে।
নিউ মার্কেট এলাকায় দুই পক্ষের সংঘর্ষ ও নিহতের ঘটনায় মোট চারটি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে নাহিদ হোসেন ও মোরসালিনকে হত্যার ঘটনায় হয়েছে দুটি মামলা। বাকি দুটি মামলা করেছে পুলিশ।
চার মামলায় মোট আসামি এক হাজার ৫৭৪ জন। এর মধ্যে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় করা একটি মামলায় ২৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। মামলার এজাহারনামীয় প্রধান আসামি নিউ মার্কেট থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট মকবুল হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি পুলিশ।
হেলমেট পরা এক যুবক ধারাল অস্ত্র দিয়ে রাস্তায় পড়ে থাকা কুরিয়ার সার্ভিসকর্মী নাহিদ হোসেনকে কোপাচ্ছেন—এমন একটি ভিডিও দুদিন ধরেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘুরছে। তবে, হেলমেটধারী যুবককে এখন পর্যন্ত শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ। যদিও ওই দুর্বৃত্ত কোন পক্ষের, তা আঁচ করতে পেরেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) নিউ মার্কেট জোনের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ কমিশনার শরীফ মো. ফারুকুজ্জামান বলেন, ‘নাহিদকে কোপানোর আগে তাঁকে শিক্ষার্থী মনে করেছিল হামলাকারীরা। তবে, পরে জানতে পারে নাহিদ শিক্ষার্থী নয়। এরপর তাঁকে কোপানো হয়। কিন্তু, নাহিদকে যে বা যাঁরা কুপিয়েছে, তাকে এখনও শনাক্ত করা যায়নি।’
নাহিদ হত্যামামলা তদন্ত করছে ডিবির রমনা বিভাগের উপকমিশনার এইচ এম আজিমুল হক। তিনি বলেন, ‘হেলমেটধারীদের শনাক্ত করতে কাজ করছে পুলিশ। আমরা একাধিক সিসি ক্যামেরার ফুটেজ, ভিডিও ও ছবি দেখছি। বেশ কয়েক জনকে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। আমরা নাহিদ ও মোরসালিনকে হত্যা করা হেলমেটধারী ব্যক্তিদের খুঁজছি।’
তদন্তকারী সংস্থার দাবি, সংঘর্ষের সময় কুরিয়ার সার্ভিসকর্মী নাহিদ হোসেন হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়া হেলমেটধারীরা চার থেকে পাঁচ জনের একটা দল ছিল।
এ ঘটনায় সন্দেহভাজন কয়েক জনকে নজরদারিতে রেখেছে পুলিশ।
গত সোমবার রাত ১২টায় শুরু হয় ব্যবসায়ী ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ। আড়াই ঘণ্টা সংঘর্ষের পর দিন মঙ্গলবার দিনভর নিউ মার্কেট এলাকায় দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ চলে।
এ ঘটনায় গত বুধবার পর্যন্ত মার্কেট বন্ধ ছিল। এ দিন সংঘর্ষের ঘটনা না ঘটলেও দুপক্ষ ছিল মুখোমুখি। পরে বিকেলে ঢাকা কলেজ এলাকায় কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটে। অবশেষে দুপক্ষের সমঝোতায় গতকাল শুক্রবার মোটামুটি জমে ওঠে বেচাকেনা।