ছেলে নিহতের কারণ জানতে গিয়ে পোশাককর্মী খুন, আসামি গ্রেপ্তার
গাজীপুরে ছেলে হত্যার বিচার চাইতে গিয়ে প্রতিপক্ষের মারধরে পোশাককর্মী আসাদুল ইসলাম নিহতের ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে গতকাল বুধবার রাতে পাঁচজনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন। পরে রাতেই আসামি আলমগীর নামে ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আজ বৃহস্পতিবার গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম মামলা ও গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার আসামিরা হলেন গাজীপুর মহানগরীর বাহাদুরপুর তুলসীভিটা এলাকার মোজাম্মেল (৩৫), একই এলাকার আলমগীর (৩২), রুবেল (৩০), মান্নান (৩৫) এবং বাবু (২৮)।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গাজীপুর সদরের বাহাদুরপুর তুলসীভিটা এলাকায় সপরিবারে ভাড়া থেকে একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন আসাদুল। গত ৩ আগস্ট বেলা ১১টার দিকে তুরাগ নদে মাছ ধরার কথা বলে তাঁর ছেলে নয়নকে (১২) বাড়ি থেকে ডেকে নেয় আঙ্গুটিয়াচালা এলাকার প্রতিবেশী সেজু (২৪), আনন্দ (২২), বাবলু (৪০) ও শাহীনসহ (২০) কয়েক যুবক।
পরে নয়নের সঙ্গে থাকা এসব যুবক জানান, নৌকা থেকে নদে পড়ে নিখোঁজ হয় নয়ন। এদিন সন্ধ্যায় নদী থেকে নয়নের লাশ উদ্ধার করে স্থানীয়রা। তবে এ ব্যাপারে নিহতের বাবা আসাদুল মৌখিক অভিযোগ আনেন, নয়নকে নৌকা থেকে নদীতে ফেলে খুন করা হয়েছে।
নয়নের লাশ গ্রামের বাড়িতে দাফন শেষে ৮ আগস্ট গাজীপুর ফিরে আসেন নয়নের বাবা আসাদুল ইসলাম। ফিরে এসে তিনি ওই চারজনের (নয়ন যাদের সঙ্গে মাছ ধরতে গিয়েছিল) বাড়িতে গিয়ে নয়নের মৃত্যুর প্রকৃত ঘটনা জানতে চান। এ সময় মামলার আসামিরা ওই চারজনের পক্ষ হয়ে নয়নের মৃত্যুর ব্যাপারে পরে কথা বলবে বলে জানায়। তারা বিষয়টি নিয়ে সময়ক্ষেপণ করতে থাকে।
এ নিয়ে গত সোমবার বিকেলে বৈঠকের আয়োজন করা হয়। এদিন আসাদুল ইসলামের প্রতিপক্ষের লোকজন উপস্থিত না থাকায় সালিশ অনুষ্ঠিত হয়নি। পরবর্তীতে গতকাল বুধবার ফের সালিশের তারিখ নির্ধারিত হয়।
গতকাল সকালে নয়নের মৃত্যুর ব্যাপারে কথা বলতে স্ত্রী ও তিন ছেলেকে নিয়ে আসাদুল ইসলাম স্থানীয় ইলিয়াসের বাড়িতে যান। এ বিষয় নিয়ে কথা বলতে বলতে দুপুর গড়িয়ে যায়। এক পর্যায়ে বিকেল ৩টার দিকে দুপক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। এ সময় আসামি মোজাম্মেল, আলমগীর, রুবেল, মান্নান ও নয়নের বাবা আসাদুলের ওপর আক্রমণ করে। তারা আসাদুলকে অনবরত মারধর করে এবং বুকে লাথি মারে। পরে আসাদুলকে উদ্ধার করে স্থানীয় ক্লিনিকে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম জানান, পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী শেফালী বেগম বাদী হয়ে বুধবার রাতে পাঁচজনের নামে সদর থানায় মামলা করেন। পুলিশ রাতেই মামলার আসামি আলমগীরকে গ্রেপ্তার করে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।