ছয় ছাত্রের চুল কেটে দেওয়া শিক্ষক এবার চেয়ারম্যান প্রার্থী
লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে ছয় ছাত্রের চুল কেটে দেওয়া সেই মাদরাসা শিক্ষক মঞ্জুরুল কবির মঞ্জু জামিনে বেরিয়ে এবার ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান প্রার্থী হচ্ছেন। তিনি উপজেলার হামছাদী কাজিরদিঘীরপাড় আলিম মাদরাসার সহকারী শিক্ষক ও বামনী ইউনিয়ন জামায়াতের আমির।
আজ বুধবার দুপুরে মঞ্জুর পক্ষে গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী ও মো. ইউছুফ পাটওয়ারীসহ স্থানীয় জামায়াতের ৮ থেকে ১০ নেতাকর্মী উপজেলা পরিষদে গিয়ে রিটানিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন।
এর আগে গত সোমবার জামিনে বেরিয়ে তাৎক্ষণিক এক বক্তব্যে ইউপি নির্বাচনের প্রস্ততি নেওয়ার জন্য শুভাকাঙ্ক্ষীদের আহ্বান জানিয়েছেন। এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও স্থানীয়ভাবে ছড়িয়ে পড়ছে।
বামনী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের রিটানিং কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কে এম মোস্তাক আহমেদ বলেন, ‘কয়েক ব্যক্তি এসে মঞ্জুরুল কবির নামের এক প্রার্থীর মনোনয়ন ফরম নিয়েছেন। এছাড়া আজ পর্যন্ত আমাদের কাছ থেকে ছয়জন প্রার্থী ফরম সংগ্রহ করেছেন। তৃতীয় ধাপের এ নির্বাচনের মনোনয়ন ফরম জমা শেষ দিন ২ নভেম্বর। ভোটগ্রহণ আগামী ২৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে।
এ বিষয়ে শিক্ষক মঞ্জুরুল কবির মঞ্জুর বক্তব্য জানতে মোবাইল ফোনে রাত ৮টার দিকে দুইবার কল করলে তিনি কেটে দিয়েছেন। তবে চুল কাটার ঘটনার পর তিনি সাংবাদিকদের কাছে বলেছিলেন, ‘নৈতিকতা ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার জন্য কয়েকছাত্রের চুল কাটা হয়েছে। এর আগে ছাত্রদের চুল কেটে প্রতিষ্ঠানে আসতে বলা হয়েছিল।’
রায়পুর থানা পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, উপজেলার হামছাদী কাজিরদিঘীরপাড় আলিম মাদরাসার শিক্ষার্থীরা ১৮ সেপ্টেম্বর শ্রেণিকক্ষে পাঠ্য কার্যক্রমে অংশ নেয়। এক পর্যায়ে শিক্ষক মঞ্জুরুল কবির দশম শ্রেণির (দাখিল) ছয় ছাত্রকে দাঁড় করিয়ে শ্রেণিকক্ষের সামনের বারান্দা আসতে বলেন। এ সময় তিনি উত্তেজিত হয়ে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে একটি কাঁচি দিয়ে একে-একে সবার মাথার টুপি সরিয়ে সামনের অংশের চুল এলোমেলোভাবে কেটে দেন। পরে তারা লজ্জায় ক্লাস না করেই বেড়িয়ে যায়। এ ঘটনার ১ মিনিট ১০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ৮ অক্টোবর সকাল থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে দেখা যায়। ওই রাতেই শিক্ষক মঞ্জুকে উপজেলার বামনী ইউনিয়নের কাজিরদিঘীরপাড় এলাকা থেকে আটক করা হয়। মধ্যরাতেই মাদরাসাছাত্র শাহাদাত হোসেনের মা শাহেদা বেগম বাদী হয়ে শিশু নির্যাতন দমন আইনে তার বিরুদ্ধে মামলা করেন। পরে মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে ৯ অক্টোবর বিকেলে তাকে লক্ষ্মীপুর আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। ১৪ দিন পর সোমবার আদালত তাঁর জামিন মঞ্জুর করেন।