জবিতে গত তিনদিনে ৫০ শিক্ষার্থীর দেহে ডেঙ্গুর উপসর্গ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী হাসান মেহেদী। আবাসিক সুবিধা না থাকায় পুরান ঢাকায় মেসে থেকে পড়াশোনা করেন। গত সপ্তাহে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিতে আসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে। প্রাথমিক ভাবে ভাইরাস জ্বর মনে করলেও পরে হাসাপাতালে পরীক্ষা করলে ডেঙ্গু পজিটিভ আসে।
হাসান মেহেদীর মতো গত তিনদিনে এরকম দুইশো জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ১৫০ জন শিক্ষার্থী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে জ্বরের উপসর্গ নিয়ে এসেছেন। আর এরমধ্যে ৫০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে রয়েছে ডেঙ্গুর উপসর্গ। আজ শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারের চিকিৎসক উপপরিচালক মিতা শবনম এনটিভি অনলাইনকে ডেঙ্গু উপসর্গ নিয়ে আসার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
চিকিৎসক মিতা শবনম বলেন, ‘প্রতিদিনই মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসা নিতে আসা শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রায় ৫০ শতাংশ শিক্ষার্থী জ্বর, ঠান্ডার উপসর্গ নিয়ে আসছেন। তাদের মধ্যে প্রায় এক তৃতীয়াংশদের ডেঙ্গুর উপসর্গ রয়েছে। যারা ডেঙ্গুর প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে তাদের কী করতে হবে তা এখান থেকে বলে দেওয়া হচ্ছে। তবে যেসব শিক্ষার্থীর মধ্যে ডেঙ্গুর উপসর্গ রয়েছে আমরা তাদের ডেঙ্গু টেস্ট করাতে পাঠাচ্ছি কিন্তু তারা আর পরীক্ষার রিপোর্ট নিয়ে আসেন না। আসলে আমরা আরও সঠিকভাবে আক্রান্তের সংখ্যাটা বলতে পারতাম।’
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন জায়গায় ড্রেনগুলোতে পানি জমে থাকতে দেখা গিয়েছে। সেখানে আবার রয়েছে মশার লার্ভা। এসব জায়গায় পানি পরিষ্কার ও চলাচলের জন্য প্রশাসনের যেন কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। ক্যাম্পাসে ফগার মেশিন দিয়ে ওষুধ ছিটিয়েই দায় সারছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। প্রশাসনের কার্যকর উদ্যোগ না থাকায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী আসসাইফ বলেন, ‘ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় পানি জমে আছে। আর জমা পানি ডেঙ্গু মশার বিস্তারের জন্য উপযুক্ত। প্রশাসন যদি ড্রেনগুলো সচল করার উদ্যোগ না নেয় তাহলে ক্যাম্পাসে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তের ফলাফল ভয়াবহ হতে পারে।’
হিসাববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী হুমায়রা মেনেকা বলেন, ‘চারদিক ডেঙ্গু যেভাবে ছড়িয়ে পড়ছে এতে আমরা খুবই চিন্তিত। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উচিত ক্যাম্পাস পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা, তাহলে কিছুটা হলেও ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমবে।’