জলাবদ্ধতা নিরসনে অবকাঠামোর ভুল সংশোধন করতে হবে : মন্ত্রী
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, জলাবদ্ধতা নিরসন ও নিষ্কাশনসহ অন্যান্য সব সমস্যা সমাধান করা হবে। জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পগুলোর অবকাঠামোগত ডিজাইনে কোনো ভুল থাকলে তা সংশোধন করার কথা বলেন তিনি।
আজ বুধবার পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ‘চট্টগ্রাম মহানগরীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ, জলাবদ্ধতা নিরসন ও নিষ্কাশন উন্নয়ন’ শীর্ষক আন্তমন্ত্রণালয় সভায় সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন এলজিআরডিমন্ত্রী। সভায় পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক, উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম, সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ার, স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মন্ত্রী বলেন, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম পোর্ট অথরিটি এবং সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমন্বয় করে চট্টগ্রাম মহানগরীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ, চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের অবকাঠামোর ডিজাইনে কোনো ভুল থাকলে তা সংশোধন করতে হবে।
তাজুল ইসলাম বলেন, চট্টগ্রাম মহানগরীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ, জলাবদ্ধতা নিরসন ও নিষ্কাশনে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের উদ্যোগেও প্রকল্প চলমান রয়েছে। এসব প্রকল্পের অধীন বন্যা নিয়ন্ত্রণ, জলাবদ্ধতা নিরসনে যে নকশা করা হয়েছে সেগুলো আজকের সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পুনঃবিবেচনা করার নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
সমস্যা সমাধানে চলমান প্রকল্পের পাশাপাশি প্রয়োজনে নতুন প্রকল্প নেওয়ার কথা উল্লেখ করে মো. তাজুল ইসলাম বলেন, চট্টগ্রাম ওয়াসার মাস্টারপ্ল্যান এবং জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের অবকাঠামোর ডিজাইনে কোনো ভুল থাকলে তা সংশোধন করতে হবে। এ ছাড়া চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডিজাইনে ওয়াটার পন্ড নির্মাণ ও স্থান নির্বাচনের বিষয়ে যৌথ পর্যালোচনারও পরামর্শ দেন তিনি।
মন্ত্রী জানান, জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের অবকাঠামো নির্মাণকাজ বাস্তবসম্মত ও টেকসই হতে হবে যাতে চট্টগ্রামবাসী প্রকল্পের দীর্ঘমেয়াদি সুফল ভোগ করতে পারে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে। এ ব্যাপারে কোনো গাফলতি মেনে নেওয়া হবে না। এমন কোনো কাজ করা যাবে না যার জন্য পরবর্তীতে মানুষকে ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
‘ডেঙ্গু একটি বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ’
দেশের ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আমরা ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বন্ধে সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে প্রাণান্তকর চেষ্টা করে যাচ্ছি। মন্ত্রণালয়, সিটি করপোরেশনের মেয়র, কাউন্সিলর এবং স্বেচ্ছাসেবীরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি জানান, ডেঙ্গু থেকে বাঁচতে সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই। তাই জনগণকে সচেতন করার জন্য আমরা সব ধরনের উদ্যোগ হাতে নিয়েছি। টেলিভিশন, পত্র-পত্রিকায় সব জায়গায় ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালানো হচ্ছে। কিন্তু মানুষ যদি অসচেতন হয় তাহলে ডেঙ্গু মোকাবেলা করা কঠিন হবে। সারা পৃথিবীতে এক মিলিয়নের বেশি মানুষ প্রতিবছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয় উল্লেখ করে তিনি জানান, এটি শুধু আমাদের জন্য নয়, বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ।
মন্ত্রী আরও বলেন, জুলাই মাসের শেষের তথ্য অনুযায়ী, ভিয়েতনামে ৩৭ হাজার, ফিলিপাইনে ৩১ হাজার, মালয়েশিয়ায় ১৫ হাজার এবং সিঙ্গাপুরে তিন হাজার ৫০০ মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে। তবে বিশ্বের অন্য দেশে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব কী পর্যায়ে রয়েছে তা আমাদের জন্য বড় বিষয় নয়। আমরা আমাদের পক্ষ থেকে সব ধরনের চেষ্টা চালাচ্ছি। উভয় সিটি করপোরেশনে ২০ জন ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
তাজুল ইসলাম বলেন, ঈদের ছুটিতে অনেকেই গ্রামের বাড়ি যাওয়ায় বাসাবাড়িতে পানি জমে থাকায় এডিস মশা বৃদ্ধির একটি অন্যতম কারণ। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে একজনও মৃত্যুবরণ করুক এটা কারও কাম্য নয়। এসব অস্বাভাবিক মৃত্যু আমাদেরকে ব্যথিত করে।