জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারকিয়ার মিডিয়াপ্রধান গ্রেপ্তার
জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারকিয়ার মিডিয়া অ্যান্ড আইটি বিভাগের প্রধান মো. সাকিব বিন কামালকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের একটি টিম। গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর সবুজবাগ থানার কমলাপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আজ মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) কাউন্টার টেরোরিজম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জামাতুল আনসার আল হিন্দাল শারকিয়ার মিডিয়া অ্যান্ড আইটি বিভাগের প্রধান সাকিব বিন কামাল একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটি থেকে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং সম্পন্ন করেন। তিনি শিক্ষকতা ও অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং কাজে জড়িত। ২০১০ থেকে তিনি জামায়াতুল মুসলিমিন ও হিজবুত তাহরির সংগঠনের সঙ্গে জড়িত হয়ে উগ্রবাদ মতবাদে দিক্ষীত হয়ে সমমনাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে একটি গ্রুপ তৈরি করেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, গ্রুপটি ঢাকা শহরে বিভিন্ন জায়গায় বৈঠক করে অর্থ সংগ্রহ ও রিক্রুটমেন্টের কাজ করতে থাকে। ২০১৩-তে তিনি বৈশ্বিক উগ্রবাদের উত্থানে নব্য জেএমবি মতাদর্শের প্রতি অনুপ্রাণিত হয়ে তাদের মতাদর্শ প্রচারে কাজ শুরু করেন। ২০১৫ সালে সন্ত্রাস বিরোধী আইনে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে যান। কারাগারে থাকাকালে পরিচয় হয় জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারকিয়া’র আধ্যাত্মিক নেতা শামিন মাহফুজের সঙ্গে। শামিন মাহফুজ তাকে নব্য জেএমবি মতাদর্শ থেকে সরিয়ে তার সংগঠনে কাজ করার জন্য উদ্বুদ্ধ করেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০১৭ সালে সাকিব বিন কামাল কারাগার থেকে বের হয়ে শামিন মাহফুজের সংগঠনের কাজ করতে থাকেন। শামিন মাহফুজের নেতৃত্বে সংগঠনের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক, কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও মিডিয়া-সিকিউরিটি বিষয়ে আলাপ-আলোচনা চলতে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় পাহাড়ে সক্রিয় কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। এই সমঝোতা স্মারকের আওতায় সশস্ত্র প্রশিক্ষণ, অস্ত্র ক্রয়, রিক্রুটমেন্ট ও সংগঠনের নতুন নাম ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারকিয়া’ দেওয়া হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, সাকিব বিন কামালের আইটি ও ইংরেজি ভাষায় দক্ষতার কারণে শামিন মাহফুজ তাকে এই সংগঠনের আইটি ও মিডিয়া বিভাগের দায়িত্ব দেযওয়া হয়। শামিন মাহফুজের নির্দেশে সংগঠনের নিরাপত্তার স্বার্থে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে নিরাপদে ইন্টারনেট ব্রাউজিং, গোপন যোগাযোগের অ্যাপ চালানো এবং পাহাড়ে ট্রেনিং ক্যাম্পে নাইট ভিশন সিকিউরিটি ক্যামেরা স্থাপনের বিষয়ে সাকিব বিন কামাল কাজ করেন। সংগঠনের মানহাজ ও আক্বিদা ইংলিশে অনুবাদ করে একটি গ্লোবাল প্লাটফর্মের মাধ্যমে সারাবিশ্বে ছড়িয়ে দিয়ে একটি গ্লোবাল অডিয়েন্স তৈরির জন্য কাজ করেন।
এ ছাড়া, সংগঠনে গোপনে রিক্রুটমেন্ট এবং অন্যান্য জঙ্গি গোষ্ঠির সদস্যদের এই সংগঠনের হয়ে কাজ করার জন্য সাকিব বিন কামাল কাজ করে আসছিলেন। উগ্রবাদে জড়িত থাকার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে সন্ত্রাস বিরোধী আইনে ডিএমপির উত্তরা পশ্চিম ও রমনা থানায় দুটি মামলা রয়েছে।
ডিএমপির ডেমরা থানায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে সাকিব বিন কামালকে আদালতে পাঠানো হয়েছে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।