জামালপুরে মাদ্রাসা থেকে পালিয়েছিল নিখোঁজ ৩ ছাত্রী
জামাপুরের ইসলামপুর থেকে নিখোঁজের পাঁচ দিন পর তিন মাদ্রাসাছাত্রীকে রাজধানী ঢাকা থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। তারা মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে গিয়েছিল। গত রোববার ভোরে এই তিন শিক্ষার্থী মাদ্রাসা থেকে নিখোঁজ হয়।
আজ শুক্রবার বিকেলে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মো. নাসির উদ্দিন আহমেদ জানান, মাদ্রাসায় পড়তে ভালো না লাগায় ইসলামপুর উপজেলার দারুত তাকওয়া মহিলা কওমি মাদ্রাসা থেকে দ্বিতীয় শ্রেণির তিন শিক্ষার্থী পালিয়ে গিয়েছিল।
তিন শিক্ষার্থী হলো উপজেলার গাইবান্ধা ইউনিয়নের পোড়ারচর সরদারপাড়ার মাফেজ শেখের মেয়ে মীম আক্তার (৯), গোয়ালেরচর ইউনিয়নের সভূকুড়া গ্রামের সুরুজ্জামানের মেয়ে সূর্যবানু (১০) ও মোল্লাপাড়া গ্রামের মনোয়ার হোসেনের মেয়ে মনিরা (১১)। গত রোববার রাতে তারা পালিয়ে যায়।
নিখোঁজ ওই তিনজনকে উদ্ধারের পর জিজ্ঞাসাবাদে তারা এই তথ্য জানিয়েছে। এখন আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাদের অভিভাবকদের হাতে তুলে দেওয়া হবে।
পুলিশ সুপার আরও জানান, নিখোঁজের পর গত বুধবার নিখোঁজ মনিরার বাবা মো. মনোয়ার হোসেন ইসলামপুর থানায় মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে মামলা করলে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। সে দিনই ইসলামপুর থানার পুলিশ কল্যাণ মার্কেটের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করে দেখতে পায় ওই তিন ছাত্রী ইসলামপুর রেল স্টেশনের দিকে যাচ্ছে। পরের দিন ইসলামপুর সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. সুমন মিয়ার নেতৃত্বে একটি টিম ঢাকার কমলাপুর রেল স্টেশনের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করে দেখতে পায় তারা তিনজন কমলাপুর স্টেশনের গেইট দিয়ে বাইরে বের হয়ে যাচ্ছে। এই ফুটেজের সূত্র ধরে গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে মুগদার মান্ডা এলাকার এক বস্তি থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়। রাতেই তাদের সেখান থেকে উদ্ধার করে জামালপুরে আনা হয়েছে।
পুলিশ সুপার বলেন, ‘আমরা এই কয়েকদিন শিক্ষার্থী তিনজনকে উদ্ধারে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছি। এখন তদন্ত করে দেখা হবে মাদ্রাসাতে শিক্ষার্থীদের উপর কোনো প্রকার নির্যাতন করা হয়েছে কি না।
উল্লেখ্য, জামাপুরের ইসলামপুর উপজেলার গোয়ালেরচর ইউনিয়নের মেজর জেনারেল খালেদ মোশারফ বীর উত্তম সেতুর পূর্বপাড়ে সভূকুড়া বাংলাবাজার এলাকায় দারুত তাকওয়া মহিলা কওমি মাদ্রাসা থেকে দ্বিতীয় শ্রেণির এই তিন শিক্ষার্থী নিখোঁজ হয়। পরে শিক্ষার্থী নিখোঁজের ঘটনায় মাদ্রাসার সব শিক্ষার্থীকে তাদের অভিভাবকের হাতে তুলে দিয়ে মাদ্রাসা বন্ধ করে দেওয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মুহতামিম মাওলানা আসাদুজ্জামানসহ চারজনকে থানায় আনা হয়।