জামালপুর পৌর এলাকায় ৩০ জুন পর্যন্ত লকডাউন
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পাওয়ায় জামালপুর পৌর এলাকায় লকডাউন ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন। তবে লকডাউনের প্রথম দিনে শহরের চিত্র ছিল প্রতিদিনের মতই স্বাভাবিক।
এদিকে, শহরের বেশ কয়েকটি এলাকায় সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে দ্রুত। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় নতুন করে ২১ জনের দেহে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
জামালপুর পৌর এলাকায় গত কয়েক দিনে সংক্রমণের হার দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায় করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত জামালপুর পৌর এলাকায় বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মুর্শেদা জামান গতকাল রোববার রাতে এ বিষয়ে একটি গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেন।
গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা বলা হয়েছে, সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে। আক্রান্ত ব্যক্তির বাসস্থান লকডাউনের আওতমুক্ত থাকবে। আক্রান্ত ব্যক্তি সব স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবে, কোনোক্রমেই বাড়ির বাইরে আসতে পারবে না। এছাড়াও গণপরিবহনে অর্ধেক যাত্রী উঠাতে হবে। সভা-সমাবেশ হয় এমন ধরনের সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান বন্ধ রাখতে হবে। সব ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান, শপিংমল স্বাস্থ্যবিধি মেনে খোলা রাখা যাবে, তবে স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করলে দোকান বন্ধসহ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে জরুরি সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান, পরিবহন বিধিনিষেধের আওতামুক্ত থাকবে।
আজ সোমবার সকাল থেকে লকডাউন কার্যকর হওয়ার কথা থাকলেও শহরের ব্যস্ততম সড়ক ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলো ছিল প্রতিদিনের মতোই স্বাভাবিক। বিধিনিষেধ অমান্য করে কোনো প্রকার স্বাস্থবিধি ও সামাজিক দূরত্ব বজায় না রেখে যানবাহনগুলোতে চলছে যাত্রী পরিবহন। দোকান পাট, শপিংমলসহ সব জায়গায় সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রশাসনের নির্দেশনা মেনে চলার প্রবণতা দেখা যায়নি। সকাল বেলা থেকেই বিভিন্ন কোচিং সেন্টারগুলো খোলা ছিল।
সিভিল সার্জন ডা. প্রণয় কান্তি দাস বলেন, ‘জামালপুরে গত ২৪ ঘণ্টায় ১১৭ জনের নমুনা পরীক্ষায় নতুন করে ২১ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে, সংক্রমণের হার ১৭ দশমিক ৯৪ শতাংশ।
জামালপুর পৌর শহরের সব থেকে ঘনবসতিপূর্ণ মুসলিমাবাদ, কাচারীপাড়া ও বাগেরহাটা এলাকায় সংক্রমের হার সবচেয়ে বেশি। জেলায় গত এক সপ্তাহে ৫৫৪ জনের নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে ১০১ জনের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ মোকলেছুর রহমান বলেন, ‘বিধিনিষেধ কার্যকর করতে জামালপুর সদর উপজেলায় তিনটি টিম ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করবে। এছাড়াও প্রতিটি উপজেলায় ইউএনও ও এসিল্যান্ড ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে সবাইকে মাস্ক ব্যবহার ও সরকারি নির্দেশনা মেনে চলতে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।’
উল্লেখ্য, জেলায় এ পর্যন্ত দুই হাজার ৩৬৫ জন আক্রান্ত হয়েছেন। সুস্থ হয়েছেন দুই হাজার ১৮৫ জন। করোনায় মারা গেছেন ৩৬ জন।