জামিন জালিয়াতি : আইনজীবী রাজু ছয়দিনের রিমান্ডে
বগুড়ায় আওয়ামী লীগের দুপক্ষের সংঘর্ষের মামলায় ভুয়া আগাম জামিনের আদেশ তৈরির ঘটনায় গ্রেপ্তার আইনজীবী রাজু আহমেদ রাজীবের ছয়দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোর্শেদ আল মামুন ভূঁইয়া এ আদেশ দেন।
বিষয়টি আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) নিজাম উদ্দিন এনটিভি অনলাইনকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আজ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আসামিকে হাজির করে ১০ দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক ছয়দিন রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দেন।
এর আগে গতকাল বুধবার পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সদস্যরা আইনজীবী রাজুকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করে।
মামলার নথি থেকে জানা গেছে, হাইকোর্টের নির্দেশে গত ৯ জুন বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চে মামলার প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে আদালত দুই আইনজীবী ও কম্পিউটার অপারেটর মাসুদ রানাকে দুই সপ্তাহের মধ্যে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন। আসামিদের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের জাল আদেশ দাখিল করে বগুড়ার আদালত থেকে জামিন নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় হাইকোর্ট গত ২৪ ফেব্রুয়ারি এক আদেশে যুবলীগনেতা ও কাউন্সিলর মো. আমিনুল ইসলামসহ ৩০ আসামিকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন। ওই আদেশ বাস্তবায়ন করে সাতদিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে বিষয়টি তদন্ত করে হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়।
আরও জানা গেছে, গত ৯ ফেব্রুয়ারি বগুড়াতে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় পাল্টাপাল্টি তিনটি মামলা হয়। এর মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম মোহনের ছোটভাই মশিউল আলম বাদী হয়ে ১০ ফেব্রুয়ারি বগুড়া থানায় মামলা করেন। মামলায় স্থানীয় যুবলীগের সহসভাপতি মো. আমিনুল ইসলামসহ ৩৩ জনের নাম উল্লেখ করা হয় এবং অজ্ঞাত আরও ২০-২৫ জনকে আসামি করা হয়। এ মামলায় হাইকোর্ট থেকে আমিনুল ইসলামসহ ৩০ জনের জামিন নেওয়ার একটি আদেশনামা তৈরি করা হয়। পরে এ ভুয়া আদেশের তথ্য সংশ্লিষ্ট আদালতের নজরে আসে। এরপরে ভুয়া আগাম জামিন আদেশ তৈরির ঘটনায় সিআইডির তদন্তে চারজনের নাম উঠে আসে।
এরা হলেন—ঢাকা জজ কোর্টের আইনজীবী রাজু আহমেদ রাজীব, বগুড়া আদালতের আইনজীবী তানজীম আলম ইসলাম, ঢাকা জজ কোর্টের কম্পিউটার অপারেটর মাসুদ রানা ও ঢাকা জজ কোর্টের আইনজীবীর সহকারী মো. সোহাগ। পরে মো. সোহাগকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পরে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।