জিএম কাদেরের বিরুদ্ধে মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ : বিশেষ আদালতে যেতে বললেন হাইকোর্ট
জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদেরের বিরুদ্ধে দলীয় মনোনয়ন বাণিজ্য করে অবৈধ উপায়ে অর্জিত অর্থ ও সম্পত্তির বিষয়ে তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের বিষয়ে সাড়া দেননি হাইকোর্ট। তবে রিটটি নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন আদালত।
রিট নিষ্পত্তির পর এক পর্যবেক্ষণে আদালত বলেছেন, এ মুহূর্তে রিটের বিষয়ে কোনো নির্দেশনা দেওয়ার প্রয়োজন মনে করছি না। প্রয়োজন মনে করলে আপনারা নিম্ন আদালতের সংশ্লিষ্ট আদালতে যেতে পারেন।
এ সংক্রান্ত বিষয়ে শুনানি নিয়ে আজ মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রিটটি নিষ্পত্তি করে আদেশ দেন। রিটকারী আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. মোতাহার হোসেন সাজু বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিন আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী সাবেক ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মোতাহার হোসেন সাজু। সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট মো. হেলাল উদ্দিন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আন্না খানম কলী। আর দুদকের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. খুরশীদ আলম খান।
রিটকারী আইনজীবী মো. হেলাল উদ্দিন জানান, জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের বিরুদ্ধে অবৈধ উপায়ে অর্জিত অর্থ সম্পত্তির বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) গত ১৮ সেপ্টেম্বর অভিযোগ দেন দলটির এক নেতা। ওইদিন জাপার প্যাডে লিখে এই অভিযোগ দুদকে জমা দিয়েছে জাতীয় পুনর্গঠন প্রক্রিয়া কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক মো. ইদ্রিস আলী।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরে জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনে জাতীয় পার্টির ৪ (চার) জন নারী সংসদ সদস্যর মনোনয়ন কার্যক্রমে ১৮ কোটি ১০ লাখ টাকা উৎকোচ নেন জি এম কাদের। উৎকোচের বিনিময়ে ওই চার নারীকে জাতীয় সংসদ সদস্য হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়। মসিউর রহমান রাঙ্গার মাধ্যমে মনোনীত নারী সংসদ সদস্যদের সঙ্গে জাতীয় সংসদের আসনে মনোনীত করার অঙ্গীকার ও অর্থ প্রদানের শর্তে চুক্তিপত্র সম্পাদন হয়। এ বিষয়ে একজন নারী সংসদ সদস্যের চুক্তি হয়। যা এরই মধ্যে মিডিয়ায় ফাঁস হয়েছে। তিনজন সদস্য থেকে কমপক্ষে প্রতিজনে ৫ (পাঁচ) কোটি করে মোট ১৫ কোটি এবং প্রয়াত অধ্যাপক মাসুদা এম রশীদ চৌধুরীর কাছ থেকে ৩ কোটি ১০ লাখ টাকা দুর্নীতির মাধ্যমে জি এম কাদের গ্রহণ করেছেন। যা তদন্ত করলে বেরিয়ে আসবে।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, দলীয় পদ-পদবি ব্যবহার ও প্রভাব খাটিয়ে দলের কো-চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মুত্যুর পর মশিউর রহমান রাঙ্গাকে ব্যবহার করে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে সৃষ্টি করা একটি নামসর্বস্ব প্যাডে এরশাদ সাহেবের দস্তখত তৈরি করেন। সেটি তদন্ত শুরু না করায় দুদক লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছিল। নোটিশ পাওয়ার পরও কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের বিরুদ্ধে এমপি পদের মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগের আবেদন নিষ্পত্তি করার আর্জি জানিয়ে রিটটি করা হয়।