জিয়াউর রহমান বিভক্ত জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন : নজরুল
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, একাত্তরের রণাঙ্গনে জিয়াউর রহমান একজন সাধারণ মুক্তিযোদ্ধাই ছিলেন না, মুক্তিযুদ্ধের তিনি ছিলেন অন্যতম সংগঠক, একজন সেক্টর কমান্ডার ও জেড ফোর্সের প্রধান।
নজরুল ইসলাম বলেন, একাত্তরের ২৬ মার্চের সূচনায় তিনিই প্রথম পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ‘উই রিভোল্ট’ বলে বিদ্রোহ এবং মুক্তিযুদ্ধ শুরুর ঘোষণা দেন। এরপর কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র থেকে ‘আমি মেজর জিয়া বলছি’ বলে স্বাধীনতা ঘোষণার ঐতিহাসিক ভাষণ দিয়ে মানুষকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে উদ্দীপ্ত করেন। তবে জিয়ার সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব হচ্ছে তিনি বিভক্ত জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে পেরেছিলেন।
আজ শুক্রবার বিকেলে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪০তম শাহদাত বার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারর্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-জেটেব আয়োজিত এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে নজরুল ইসলাম খান এসব কথা বলেন।
সংগঠনের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার ফখরুল আলমের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দলের সভাপতি অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, এ্যাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার রিয়াজুল ইসলাম রিজু, বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, অধ্যক্ষ শফিউল্লাহ শফি, জেটেবের সেক্রেটারি ইঞ্জিনিয়ার এ বি এম রুহুল আমিন আকন্দ, ইঞ্জিনিয়ার সাখাওয়াত হোসেন প্রমুখ।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সততার তুলনা হয় না। স্বজনপ্রীতি শব্দটা রাষ্ট্রপতি জিয়ার অভিধানে ছিল না। দুর্নীতি সংক্রান্ত কোনো কাজকে তিনি কখনও প্রশ্রয় দেননি। রাষ্ট্রপতির মতো এত বড় একটি পদে থেকেও তিনি অতি সাধারণ জীবনযাপন করতেন। তাঁর কৃচ্ছ্রতা সাধন করার দৃষ্টান্ত বিরল। নিজের পরিবারের জন্য তিনি কিছুই করেননি। নিজের জন্য তো করেনইনি। আত্মীয়-স্বজনদের কেউ কোনো তদবিরের জন্য বঙ্গভবনে বা তাঁর বাসভবনে সাক্ষাৎ করতে আসবেন, সেটা ছিল অকল্পনীয় ব্যাপার। তেমন সাহস কারও ছিল না। আত্মীয়-স্বজনদের কাউকে তিনি তার কাছে ঘেঁষতে দিতেন না।
বিএনপিনেতা বলেন, শহীদ জিয়ার অম্লান আদর্শ, দর্শন ও কর্মসূচি আমাদের স্বাধীনতা রক্ষা, বহুদলীয় গণতন্ত্র এবং দেশীয় উন্নয়ন ও অগ্রগতির রক্ষাকবচ। জিয়া দেশ ও দেশের মানুষকে ভালোবাসতেন। তাই জাতির চরম দুঃসময়গুলোতে জিয়াউর রহমান দেশ ও জনগণের পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করেন। মহান স্বাধীনতার বীরোচিত ঘোষণা, স্বাধীনতাযুদ্ধে অসামান্য ভূমিকা এবং রাষ্ট্র গঠনে তাঁর অনন্য কৃতিত্বের কথা বাংলাদেশের মানুষ কখনো ভুলবে না।
নজরুল ইসলাম বলেন, ৭১ সালে সারা জাতি যখন স্বাধীনতাযুদ্ধের জন্য প্রস্তুত, অথচ রাজনৈতিক নেতৃত্বের সিদ্ধান্তহীনতায় দেশের মানুষ দিশাহারা, ঠিক সেই মুহূর্তে ২৬ মার্চ মেজর জিয়ার কালুরঘাট বেতার কেন্দ্রে স্বাধীনতার ঘোষণা সারা জাতিকে স্বাধীনতাযুদ্ধের অভয়মন্ত্রে উজ্জীবিত করে। এরই ফলশ্রুতিতে দেশের তরুণ, ছাত্র, যুবকসহ নানা স্তরের মানুষ যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে।
বিএনপির এ নেতা বলেন, পরবর্তীতে স্বাধীনতাত্তোর শাসকগোষ্ঠী দেশে একদলীয় একনায়কতান্ত্রিক শাসন কায়েম করেন। সেই সময় দেশের সর্বত্র ভয়াবহ নৈরাজ্য নেমে আসে। ঠিক সেই সময় রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়ে ফিরিয়ে দেন বহুদলীয় গণতন্ত্র এবং সংবাদপত্র ও নাগরিক স্বাধীনতা। তিনি দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা করেন। উৎপাদনের রাজনীতির মাধ্যমে দেশীয় অর্থনীতিকে সমৃদ্ধশালী করেন। বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ির আখ্যা থেকে খাদ্য রপ্তানিকারক দেশে পরিণত করেন। তাঁর অর্থনৈতিক সংস্কারের কারণেই বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ভিত্তি মজবুত হয়।