জেসমিনের মৃত্যু : ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাইকোর্টে
নওগাঁয় র্যাবের হেফাজতে সুলতানা জেসমিন (৪৫) নামে এক নারীর মৃত্যুর ঘটনায় ময়নাতদন্তের প্রতিবদেন হাইকোর্টে জমা দিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ। আজ মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ে এ প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে ‘অস্বাভাবিক উচ্চ রক্তচাপকে’ জেসমিনের মৃত্যুর কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের ওপর আজ শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। ওই সময় র্যাবের যেসব কর্মকর্তাদের তালিকা চাওয়া হয়েছে, সেটিও দাখিল করা হবে বলে জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।
এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে জড়িতদের নামের তালিকা জমা দিতে গতকাল সোমবার আদেশ দেন উচ্চ আদালত। আশ্বাস দেন ময়নাতদন্ত ও সুরতহাল রিপোর্ট দেখে ন্যায় বিচারের।
এর আগে, নওগাঁয় র্যাবের হাতে আটকের পর গত ২৪ মার্চ সুলতানা জেসমিন নামে ওই নারীর মৃত্যু হয়। গত ২২ মার্চ আনুমানিক বেলা ১১টার দিকে নওগাঁ শহরের মুক্তির মোড় এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। এরপর শনিবার (২৫ মার্চ) দুপুরের দিকে সুলতানার মরদেহ বুঝে পায় তার পরিবার।
সুলতানা জেসমিন নওগাঁ সদর উপজেলার চন্ডীপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে অফিস সহকারী পদে চাকরি করতেন।
ঘটনার বিষয়ে জেসমিনের ভাই সোহাগ ও তার বোনজামাই রফিকুল ইসলাম জানান, গত বুধবার (২২ মার্চ) সকালে অফিস করার জন্য বাসা থেকে বের হন জেসমিন। দুপুরের দিকে জানতে পারেন র্যাবের লোকজন জেসমিনকে আটক করেছে। এরপর অসুস্থ অবস্থায় তাকে নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কিছুক্ষণ পর সেখান থেকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার (২৪ মার্চ) সকাল ৯টার দিকে তার মৃত্যু হয়। কিন্তু মরদেহ বুঝে পাওয়া যায় আরও একদিন পর ২৫ মার্চ দুপুরে।
নিহত সুলতানার মামা ও নওগাঁ পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর নাজমুল হক বলেন, ‘নওগাঁ শহরের জনকল্যাণ এলাকায় একটা ভাড়া বাসায় থাকতেন জেসমিন। স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয় প্রায় ১৭ বছর আগে। তার এক সন্তান রয়েছে। অভাব-অনটনের মধ্য দিয়ে সন্তানকে লালন-পালন করে আসছিল জেসমিন। এর আগে তার বিরুদ্ধে কোনো দুর্নীতি বা অনিয়মের অভিযোগ শোনা যায়নি।’
জেসমিনকে আটকের বিষয়ে রাজশাহী র্যাব-৫ কোম্পানি কমান্ডার সিপিএসসি মেজর নাজমুস সাকিব বলেন, ‘একটি অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আটক করা হয়েছিল জেসমিন সুলতানাকে। আটকের পরপরই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তৎক্ষণাৎ তাকে নওগাঁ সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থা আরও খারাপ হয় এবং গত শুক্রবার স্ট্রোকে তার মৃত্যু হয়।’