জয়ের জন্মদিনে দুস্থদের মধ্যে ছাত্রলীগের খাবার বিতরণ
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৌহিত্র এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের জন্মদিনে সুবিধাবঞ্চিতদের মধ্যে খাবার, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ করেছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে শতাধিক শিশু ও ব্যক্তির মধ্যে এসব সামগ্রী বিতরণ করা হয়। বিতরণ করা সামগ্রীর মধ্যে ছিল চাল, ডাল, আম, প্যাকেটজাত দুধ, মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, খাতা, কলম ও স্কেল।
সামগ্রী বিতরণ শেষে ছাত্রলীগ সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয় বলেন, ‘সজীব ওয়াজেদ জয় ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা, তরুণদের আইকন হয়ে বাংলাদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। তরুণ প্রজন্মের আলোকবর্তিকা হয়ে সজীব ওয়াজেদ জয় যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছেন, আমরা বাংলাদেশ ছাত্রলীগও প্রধানমন্ত্রী ও জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে সব সময় কাজ করে যাব এবং শিক্ষার্থীদের যেকোনো ধরনের যৌক্তিক দাবিতে পাশে থাকব।’
ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের স্বপ্ন আমরা সর্বপ্রথম সজীব ওয়াজেদ জয়ের চোখে দেখেছিলাম। ২০০৯ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ইশতেহারে তিনিই ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্প ঘোষণা করেছিলেন, যার সুফল আমরা এখন পাচ্ছি।’
লেখক ভট্টাচার্য বলেন, ‘১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ এবং সজীব ওয়াজেদ জয়- দুজনকেই আমরা পেয়েছি। তিনি মেধাবী একজন ব্যক্তিত্ব এবং পর্দার আড়ালে থেকে সঠিক একজন উদ্যোক্তা। বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে অন্যান্য রাজনীতিবিদদের তুলনায় নিজেকে সমৃদ্ধ করে দেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে তাঁর মা, বাবা এবং জাতির পিতার মতো করেই বাংলাদেশের মানুষকে দেখেছেন।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের জন্মদিন উপলক্ষে আজিমপুরে স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম এতিমখানায় শিশুদের মধ্যে দুপুরের খাবার বিতরণ করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পদক জুবায়ের আহমেদ।
সজীব ওয়াজেদ জয় ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ২৭ জুলাই ঢাকায় পরমাণু বিজ্ঞানী এমএ ওয়াজেদ মিয়া ও শেখ হাসিনা দম্পতির ঘরে জন্ম নেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ‘জয়’ নাম রাখেন তাঁর নানা শেখ মুজিবুর রহমান।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হওয়ার সময় মা ও বাবার সঙ্গে জার্মানিতে ছিলেন জয়। পরে মায়ের সঙ্গে রাজনৈতিক আশ্রয়ে ভারতে চলে যান তিনি। তাঁর শৈশব ও কৈশোর কাটে ভারতে। সেখানকার নৈনিতালের সেন্ট জোসেফ কলেজে লেখাপড়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস অ্যাট আর্লিংটন থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে স্নাতক করেন তিনি। পরে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লোক প্রশাসনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।
২০০২ সালের ২৬ অক্টোবর ক্রিস্টিন ওভারমায়ারকে বিয়ে করেন সজীব ওয়াজেদ জয়। তাঁদের একটি কন্যাসন্তান রয়েছে।
২০০৭ সালে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম কর্তৃক গ্লোবাল লিডার অব দ্য ওয়ার্ল্ড হিসেবে নির্বাচিত হন সজীব ওয়াজেদ জয়। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ইশতেহারে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার যে স্লোগানটি যুক্ত হয় তার নেপথ্যে ছিলেন জয়। পরবর্তী সময়ে পর্দার অন্তরালে থেকে গোটা দেশে তথ্য-প্রযুক্তির বিপ্লব ঘটান এই তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ।
২০১৪ সালের ১৭ নভেম্বর সজীব ওয়াজেদ জয়কে অবৈতনিকভাবে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা পদে নিয়োগ দেওয়া হয়।
বর্তমানে দলীয় ঘরানা ছাড়াও তথ্যপ্রযুক্তি, রাজনীতি, সামাজিক, অর্থনৈতিক, শিক্ষাবিষয়ক বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে তথ্যপ্রযুক্তির বিকাশ, তরুণ উদ্যোক্তা তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন সজীব ওয়াজেদ জয়। বিশেষ করে দেশের তরুণদের দেশপ্রেমে উজ্জীবিত করে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের পথে আত্মনিয়োগ করার ক্ষেত্রে বিভিন্ন কর্মসূচি ও পদক্ষেপ নিচ্ছেন তিনি।
দেশ গঠনে তরুণদের মতামত, পরামর্শ শুনতে জয়ের ‘লেটস টক’ ও ‘পলিসি ক্যাফে’ দুটি প্রোগ্রাম ইতিমধ্যে বেশ সাড়া ফেলেছে। এ ছাড়া তিনি তরুণ উদ্যোক্তা ও তরুণ নেতৃত্বকে একসঙ্গে যুক্ত করার পাশাপাশি প্রশিক্ষিত করতে তরুণদের বৃহত্তম প্ল্যাটফরম ‘ইয়াং বাংলার’ সূচনা করেন।
লেখাপড়া করা অবস্থায় রাজনীতির প্রতি অনুরক্ত থাকলেও জয় সক্রিয় রাজনীতিতে নাম লেখান ২০১০ সালে। ২০১০ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পিতৃভূমি রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্য পদ দেওয়া হয় তাঁকে, যার মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনীতিতে আসেন তিনি। ইতোমধ্যেই ডিজিটাল বাংলাদেশের স্থপতি হিসেবে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিসরে তাঁর পরিচিতি ছড়িয়ে পড়েছে।