ঝালকাঠিতে এসআইকে কুপিয়ে সম্ভ্রম বাঁচালেন গৃহবধূ!
ঝালকাঠির কাঁঠালিয়ায় এক গৃহবধূ নিজের সম্ভ্রম বাঁচাতে পুলিশের উপপরিদর্শককে (এসআই) কুপিয়ে রক্ষা পেয়েছেন বলে দাবি করেছেন। উপজেলার তারাবুনিয়া পুলিশ ক্যাম্পের এসআই আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ করেছেন ওই গৃহবধূ।
আহত এসআই অজ্ঞাত স্থানে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
উপজেলার পাটিখালঘাটা ইউনিয়ন পরিষদের দুই নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য শাহিন হাওলাদার জানান, তারাবুনিয়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র এলাকায় ভুক্তভোগী ওই নারীর ভগ্নিপতির একটি চায়ের দোকান আছে। ভগ্নিপতির দোকানে মাঝেমধ্যে যাতায়াতের ফলে ওই নারীর পরিচয় হয় এসআই আলমগীরের সঙ্গে। আলমগীর তাঁর কাছ থেকে বিভিন্ন সময় টাকাও ধার নেন। গত সোমবার রাতে এসআই আলমগীর ওই নারীর বাড়িতে যান। তাঁর স্বামী চট্টগ্রামে চাকরি করেন। বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে তাকে ধর্ষণচেষ্টা করেন এসআই। নিজের সম্ভ্রম বাঁচাতে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এসআই আলমগীরকে কুপিয়ে রক্ষা পান তিনি। এ সময় পুলিশ কর্মকর্তার ব্যবহৃত মুঠোফোনটিও রেখে দেন ওই নারী।
ভুক্তভোগী ওই নারী জানান, তাঁকে ঘরে একা পেয়ে ধর্ষণচেষ্টা করলে তিনি পুলিশ কর্মকর্তাকে কুপিয়ে আহত করে ৯৯৯-এ ফোন করেন। খবর পেয়ে কাঁঠালিয়া থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই এসআই আলমগীর ওই বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। এ ব্যাপারে তিনি থানায় অভিযোগ করতে চাইলে পুলিশ আগে মেডিক্যালে গিয়ে পরীক্ষা করিয়ে আসতে বলে।
ভুক্তভোগী ওই নারী অভিযোগ করেন, বর্তমানে আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। লোক পাঠিয়ে আমাকে চাপ দেওয়া হচ্ছে। আমি মামলা করলে পুলিশও আমার বিরুদ্ধে মামলা করবে। আমি বোনের বাসায় আছি। এ ঘটনার বিচার চাই। আমার কাছ থেকে ধার নেওয়া টাকাও ফেরৎ দেওয়ার দাবি জানাই।
কাঁঠালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুরাদ আলী সাংবাদিকদের জানান, গত সোমবার রাত ৮টার দিকে ওই নারী ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিয়ে জানান, তাকে ধর্ষণচেষ্টা করা হয়েছে। খবর পেয়ে সেখানে গিয়েছি। তখন গৃহবধূ জানান, তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণচেষ্টা করায় কুপিয়ে আহত করে এসআই আলমগীরের মোবাইল ফোন রেখে দেওয়া হয়েছে। যদিও মোবাইলটি তিনি দেখাতে পারেননি। ঘটনাস্থলে গিয়ে এসআই আলমগীরকে পায়নি কাঁঠালিয়া থানা পুলিশ।
ওসি মুরাদ আলী বলেন, আমি রাতেই ওই মহিলাকে বলেছি, সকালে ঝালকাঠি গিয়ে মেডিক্যাল পরীক্ষা করিয়ে কাঁঠালিয়া থানায় এসে লিখিত অভিযোগ করতে। আজ বুধবার বিকেল পর্যন্ত তিনি কোনো অভিযোগ করেননি। এসআই আলমগীরের সঙ্গে ঘটনার পর থেকে তার দেখা বা কথা হয়নি।
এ প্রসঙ্গে কাঁঠালিয়া থানার তারাবুনিয়া পুলিশ ক্যাম্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক মাহাবুবুর রহমান বলেন, আমি এ ধরনের একটি ঘটনার কথা শুনেছি। কিন্তু আমি ছুটি শেষে গতকাল মঙ্গলবার ক্যাম্পে ফিরে কিছুই জানি না। আমি এখন সাক্ষী দিতে কুষ্টিয়ায় যাচ্ছি। এসআই আলমগীর ক্যাম্পেই রয়েছেন।
এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য এসআই আলমগীরের মুঠোফোনে কল করলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।