ঝালকাঠিতে বর্ধিত সভা ঘিরে উজ্জীবিত যুবলীগের নেতাকর্মীরা
দীর্ঘদিন পরে ঝালকাঠিতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে যুবলীগের বর্ধিত সভা। কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে এ সভা।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এই সভা থেকেই জেলা যুবলীগের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হতে পারে। তাই এই বর্ধিত সভাকে ঘিরে উজ্জীবিত যুবলীগের নেতাকর্মীরা।
স্বাধীনতার পর থেকে আজ পর্যন্ত ঝালকাঠিতে জেলা যুবলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি। তবে কয়েক দফায় আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। সর্বশেষ ২০১১ সালে জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছিল। তখন লিয়াকত আলী খানকে আহ্বায়ক এবং রেজাউল করিম জাকির ও হাবিবুর রহমান হাবিলকে যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়। বেশ কিছু দিন এদের নেতৃত্বে জেলা যুবলীগের কার্যক্রম চলার পর লিয়াকত আলী খান ও হাবিবুর রহমান হাবিল জেলা আওয়ামী লীগের পদ পেয়ে যুবলীগের রাজনীতি থেকে নিষ্ক্রিয় হন। এর পর থেকে পৌর কাউন্সিলর রেজাউল করিম জাকিরের নেতৃত্বে জেলা যুবলীগের রাজনীতি পরিচালিত হচ্ছে। তাকে সার্বিক সহযোগিতা করে যাচ্ছেন পৌর কাউন্সিলর ও যুবলীগনেতা কামাল শরীফ ও মো. ছবির হোসেনসহ অসংখ্য নেতাকর্মী।
বর্তমানে কেন্দ্রের নির্দেশে রেজাউল করিম জাকির আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। অতীতে যেকোনো সময়ের চেয়ে বর্তমানে ঝালকাঠি জেলা যুবলীগ অত্যন্ত সুসংগঠিত বলেও দলের তৃণমূল নেতাকর্মীরা দাবি করছেন। যুবলীগের মধ্যে নেই কোনো গ্রুপিং। কেন্দ্রঘোষিত সব কর্মসূচি পালিত হচ্ছে জাকজমকপূর্ণভাবে। পাশাপাশি জেলা আওয়ামী লীগসহ অন্য সহযোগী সংগঠনের কর্মসূচিতেও যুবলীগের ব্যাপক অংশগ্রহণ থাকে।
বর্তমানে ঝালকাঠি জেলা, সদর উপজেলা ও শহর যুবলীগের শীর্ষ পদ পাওয়ার জন্য প্রায় ডজন খানেক নেতা দৌড়ঝাঁপ করছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক রেজাউল করিম জাকির, সাবেক ছাত্রলীগনেতা পৌর কাউন্সিলর কামাল শরীফ, শহর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. ছবির হোসেন, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জামাল হোসেন মিঠু।
এ ছাড়াও অনেকেই যুবলীগের পদপ্রত্যাশী রয়েছেন। এদের মধ্যে বেশিরভাগই ছাত্রলীগের সাবেক নেতা। পদ প্রত্যাশীরা সবাই রাজনীতির মাঠে সরব রয়েছেন। এরা সবাই যুবলীগের সাবেক চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের অন্যতম সদস্য, ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমুর (এমপি) অনুসারী। করোনার সময় এই যুবলীগনেতারা বিভিন্ন মানবিক কাজ করে প্রশংসিত হয়েছেন। রেজাউল করিম জাকির, কামাল শরীফ ও মো. ছবির হোসেন কর্মহীন মানুষকে ব্যক্তিগত উদ্যোগে খাদ্যসামগ্রী প্রদান, দরিদ্রদের মাঝে খাবার বিতরণ, শিশুদের হাতে খাবার তুলে দেন।
যুবলীগ নেতা ছবির হোসেন অসহায় ব্যক্তিদের বসতঘর তুলে দেওয়া, মালামালসহ দোকান করে দেওয়া, ভ্যানগাড়িতে ভ্রাম্যমাণ সবজির দোকান, প্রতিবন্ধীদের হুইল চেয়ার দিয়ে সহায়তা করেছেন। এসব কারণে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে এবং কেন্দ্রীয় পর্যায়ে তাদের জনপ্রিয়তা বেড়েছে।
আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথি থাকার কথা রয়েছে কেন্দ্রীয় যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম বদি, প্রধান বক্তা থাকবেন কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক (বরিশাল বিভাগের দায়িত্ব প্রাপ্ত) কাজী মাজাহারুল ইসলাম, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য সাংবাদিক মানিক লাল ঘোষ, কেন্দ্রীয় কার্যকারি সদস্য সাইদুর রহমান জুয়েল ও তানিন তালুকদার।
এ ব্যাপারে শহর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. ছবির হোসেন বলেন, ‘অনেক দিন পর হলেও আমাদের এখানে যুবলীগের বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আমরা আশা করছি, এই সভার পরই জেলা কমিটি ও বিভিন্ন ইউনিটের কমিটি করা হবে। নতুন নেতৃত্বে চাঙ্গা হয়ে উঠবে যুবলীগ।’
সাবেক ছাত্রলীগনেতা পৌর কাউন্সিলর কামাল শরীফ বলেন, ‘বর্ধিত সভাকে কেন্দ্র করে ঝালকাঠি জেলার অধীনে যুবলীগের সব ইউনিটের নেতাকর্মীদের নিয়ে সভা করা হয়েছে। সেখানে আমরা ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। আমরা আশা করছি বিপুল নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে বর্ধিত সভা সফল করব।’
ঝালকাঠি জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক রেজাউল করিম জাকির বলেন, ‘দীর্ঘদিন পরে কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে ঝালকাঠিতে যুবলীগের বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আমাদের অভিভাবক আমির হোসেন আমু ছিলেন যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সফল চেয়ারম্যান। আমরা তাঁর নেতৃত্বে রাজনীতি করি। আমির হোসেন আমু কেন্দ্রীয় যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ ভাই ও সাধারণ সম্পাদক মাঈনুল হোসেন খান নিখিল ভাই আমাদের যে নেতৃত্ব উপহার দেবেন, আমরা তাই মেনে নিব।’