ঝিনাইদহ পৌর নির্বাচনে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া, আহত ৭
ঝিনাইদহ পৌরসভা নির্বাচনে স্বতন্ত্র ও আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র পদপ্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আজ বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে জেলা শহরের ধুপাঘাটা নতুন ব্রিজ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এতে সাতজন আহত হয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় গোটা পৌর এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। পাড়ামহল্লায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
জানা গেছে, আজ ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার পর জেলা শহরে বিপুল পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেট মোতায়েন করা হয়েছে। হামলার সঙ্গে জড়িতদের ধরতে অভিযান চলছে। রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত কমপক্ষে ১৫ জনকে আটক করা হয়েছে বলে পুলিশের একটি সূত্র থেকে জানানো হয়েছে।
স্বতন্ত্র মেয়র পদপ্রার্থী হিজল অভিযোগ করেন, পৌর এলাকার উদয়পুর গ্রামে জনসংযোগ করে গোবিন্দপুর এলাকায় আসা মাত্র আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র পদপ্রার্থী আব্দুল খালেকের সমর্থকরা হঠাৎ করে হামলা শুরু করে। এ সময় ইাটপাটকেল নিক্ষেপসহ বেদম মারপিট করা হয় তাদের। একপর্যায়ে ধারাল অস্ত্র দিয়ে মাথায় আঘাত করলে গুরুতর আহত হন তিনি। এ সময় তার বড় ভাই পিপুলকে বেদম মারধর করতে থাকে হামলাকারীরা।
হিজল আরও অভিযোগ করেন, নৌকার প্রার্থীর সমর্থকদের হামলায় তার অন্তত পাঁচজন সমর্থক আহত হয়েছেন। সংঘর্ষের একপর্যায়ে নিজস্ব লাইসেন্স করা পিস্তল থেকে দুই রাউন্ড ফাঁকা গুলির কথা স্বীকার করেন তিনি।
এ বিষয়ে ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সংসদ সদস্য আব্দুল হাই বলেন, ‘এক পক্ষে ঘটনা ঘটেনি। দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়াসহ ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে । এ সময় হিজল আহত হয়েছেন বলে শুনেছি। স্বতন্ত্রপ্রার্থীর লোকজন আওয়ামী লীগের সমর্থকদের ওপর আগে চড়াও হয়েছে এবং পিস্তলের গুলি বর্ষণ করা হয়েছে। গুলিবর্ষণ নিয়ে ঘটনাটি ঘটেছে।
সংসদ সদস্য আরও অভিযোগ করেন, ঘটনার পরবর্তী সময়ে জেলা শহরের পায়রা চত্বর এলাকায় পুলিশ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বেধড়ক লাঠিপেটা করেছে। এ ঘটনার নিন্দা জানান তিনি।
এ বিষয়ে পুলিশ সুপার মো. মুনতাসিরুল ইসলাম বলেন, ‘স্বতন্ত্রপ্রার্থীর ওপর হামলার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনা স্থলে যায় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।’
আওয়ামী লীগের জেলা সভাপতির অভিযোগে বিষয়ে পুলিশ সুপার (এসপি) বলেন, ‘স্বতন্ত্রর্থীর ওপর হামলাকারীরা সেখানে অবস্থান করছে এবং রাস্তা বন্ধ করে মিছিল করছে—এমন খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে যায় এবং দুজনকে আটকের চেষ্টা করে। এ সময় পুলিশের ওপর হামলা করেন তাঁরা। এতে পুলিশ উপস্থিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে মৃদু লাঠিচার্জ করেছে।’
জেলা শহরে পুলিশের টহল জোরদার করার কথাও জানান এসপি।
উল্লেখ্য, আগামী ১৫ জুন ঝিনাইদহ পৌরসভার নির্বাচন। এ নির্বাচনে মেয়র পদপ্রার্থী হয়েছেন চারজন। নৌকা প্রতীক নিয়ে লড়ছেন মো. আব্দুল খালেক, স্বতন্ত্রপ্রার্থী কাইয়ুম শাহারিয়ার জাহিদী হিজল, মিজানুর রহমান মাসুম এবং ইসলামী অন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মো. সিরাজুল ইসলাম।