টাকা পাচারের কারণে অর্থনীতি ধ্বংসের শেষ প্রান্তে : খন্দকার মোশাররফ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ‘বাংলাদেশ একটি ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। গণতন্ত্র নেই, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আজ ভুলুণ্ঠিত। বিদেশে টাকা পাচারের কারণে অর্থনীতি ধ্বংসের শেষ প্রান্তে।’
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আজ রোববার (১ জানুয়ারি) বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক ছাত্র সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. খন্দকার মোশাররফ এসব কথা বলেন। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ।
ড. খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘আওয়ামী লীগের অপশাসনে দেশের মানুষ ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। সকল প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে ফেলেছে। সরকার ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। তারা ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে পারবে না। জনগণ যে এই সরকারকে দেখতে চায় না, তা বিএনপির গণসমাবেশ সফলের মধ্য দিয়ে বার্তা দিয়েছে।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সহজে ক্ষমতা ছেড়ে দেবে না, তাদের বাধ্য করতে হবে। বিএনপি এজন্য রাজপথকেই বেছে নিয়েছে। সরকারকে বিদায় করা ছাড়া বিকল্প নেই। ছাত্র-যুবসমাজের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি করে বিদায় করতে হবে।’
খন্দকার মোশাররফ আরও বলেন, ‘সরকার যত নির্যাতন করুক, নেতাকর্মীদের কারারুদ্ধ করুক, আন্দোলন দমানো যাবে না। জনগণ রাস্তায় নেমে গেছে, সরকারের আর রক্ষা নেই। ঘোষিত ১০ দফা বাস্তবায়ন বিএনপির সামনে বড় চ্যালেঞ্জ। অন্ধকার কেটে যাবে, আলোর পথে বাংলাদেশ। যুগপৎ আন্দোলনে ইতিহাস সৃষ্টি করা হবে।’
মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে সরকারি সিন্ডিকেটের লোকজন পকেট ভর্তি করেছে। বিচার বিভাগকে দলীয়করণ করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সরকারের অবৈধ নির্দেশ মানার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ঢাকার সমাবেশ বানচাল করতে সরকার বিএনপি নেতাদের গ্রেপ্তার করেছে। সরকার যত নির্যাতন-নিপীড়ন করুক আন্দোলনকে দমানো যাবে না। জনগণ রাস্তায় নেমেছে আর রক্ষা নাই। ১০ দফা বাস্তবায়ন করাই বিএনপির প্রধান চ্যালেঞ্জ। ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে ১০ দফা বাস্তবায়ন করতে হবে। অন্ধকার কেটে যাবে, আলোর পথে বাংলাদেশ।’
সমাবেশে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘গণতন্ত্রকে পদদলিত করেছে সরকার। বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মী জেলখানায়। ছাত্রদলকে উঠে দাঁড়াতে হবে। না দাঁড়াতে পারলে নেতাকর্মীদের জেলখানাতেই থাকতে হবে। ২৩ সাল হবে কলঙ্কমুক্ত সাল, বেগম জিয়াকে মুক্ত করা হবে, এ বছর মুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা হবে।’
সমাবেশ বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান বলেন, ‘রাজপথে সবকিছুর ফয়সালা হবে। শেখ হাসিনাকে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা না হলে ছাত্রদল ৯০’র মতো গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি করে সরকারের পতন ঘটাবে।’
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও বিএনপির বিশেষ সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, ‘সারা দেশকে কারাগারে পরিণত করেছে সরকার। এ অবস্থা থেকে দেশকে মুক্ত করতে হলে সরকারকে ক্ষমতা থেকে বিদায় করতে হবে। সরকারের সময় ফুড়িয়ে গেছে। ২০২৩ সাল হবে গণতন্ত্র ও বেগম জিয়াকে মুক্ত করার বছর।’
ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল ও সাংগঠনিক সম্পাদক আবু আফসান মো. ইয়াহিয়ার পরিচালনায় ছাত্রসমাবেশে আরও বক্তব্য দেন নাজিম উদ্দিন আলম, আজিজুল বারী হেলাল, শহীদুল ইসলাম বাবুল, আব্দুল কাদির ভুইয়া জুয়েল, রাজীব আহসান, আকরামুল হাসান, ফজলুর রহমান খোকন, ইকবাল হোসেন শ্যামল, যুবদলের মামুন হাসান, মৎস্যজীবী দলের মো. আব্দুর রহিম, কৃষকদলের হাসান জাফির তুহিন, মহিলা দলের আফরোজা আব্বাস ও হেলেন জেরিন খান, তাঁতীদলের কাজী মনিরুজ্জামান মনির, শ্রমিকদলের মোস্তাফিজুল করিম মজুমদার, ছাত্রদলের বর্তমান কমিটির মো. তানজিল হাসান, তবিবুর রহমান সাগর, ঢাবি ছাত্রদলের আরিফুল ইসলাম প্রমুখ।