টিআরপি নির্ধারণ ও ক্লিনফিড সহায়তা দিতে প্রস্তুত বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট
টিআরপি নির্ধারণ এবং বিদেশি চ্যানেলের ক্লিনফিড পেতে কারিগরি সহায়তায় বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর বাংলা মোটরে কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউয়ে বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের (বিএসসিএল) কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
এ সময়ে বিএসসিএলের চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ, পরিচালক অধ্যাপক ড. সাজ্জাদ হোসেন, তথ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. মিজান-উল-আলমসহ সংস্থার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
দেশের গণমাধ্যমের উন্নয়নের স্বার্থে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট কাজ করছে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি বলেন, স্যাটেলাইট চ্যানেলগুলোর টিআরপি নির্ধারণে প্রযুক্তিগত সহায়তা দিতে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট প্রস্তুত আছে। কারণ দেখা যাচ্ছে যে একটি বা দুটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান দুইশরও কম নমুনা বা স্যাম্পল নিয়ে টেলিভিশনগুলোর টিআরপি নির্ধারণ করছে, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ দেশের জনসংখ্যা ও টেলিভিশন দর্শকের সংখ্যার নিরিখে কমপক্ষে ধারাবাহিক ১০ হাজার স্যাম্পল নিলে তবেই প্রকৃত টিআরপি নির্ধারণ করা যাবে। আমাদের পাশের দেশ ভারতেও তাদের জনসংখ্যার অনুপাতে ৭০ থেকে ৮০ হাজার স্যাম্পল নিয়ে সরকারের আওতাধীন/নিয়ন্ত্রণাধীন কয়েকটি সংস্থার মাধ্যমে টিআরপি নির্ধারিত হয়। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি আমাদের দেশে এত দিন সম্পূর্ণ ভৌতিক উপায়ে এ টিআরপি নির্ধারিত হচ্ছে। তাই সরকার এ জায়গায় স্বচ্ছতা আনার লক্ষ্যে ইতোমধ্যেই একটি কমিটি গঠন করার পাশাপাশি কয়েকটি বৈঠকও করেছে। সুতরাং বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের প্রযুক্তিগত সহায়তা নিয়ে প্রকৃত চ্যানেলগুলোর টিআরপি সহসাই আমরা একটি সিদ্ধান্তে/নীতিমালায় পৌঁছাব। টিআরপির এ নীতিমালা ওটিটি প্লাটফর্মগুলোর ক্ষেত্রেও কার্যকর হবে বলে তিনি জানান।
তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ জানান, বিদেশি চ্যানেলে বাংলাদেশি পণ্যের বিজ্ঞাপন আমরা আইন অনুযায়ী বন্ধ করেছি। তেমনি বিদেশি চ্যানেলগুলোতেও বিদেশি বা তাদের পণ্যের বিজ্ঞাপন প্রচার আমাদের বিদ্যমান আইন সমর্থন করে না। এ নিয়ে আমরা কাজ শুরু করেছিলাম কিন্তু করোনা সংকটের কারণে সে প্রক্রিয়া কিছুটা শ্লথ হলেও আমরা আবার শুরু করেছি। যদিও বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী চ্যানেল কর্তৃপক্ষ বা যারা এখানে প্রদর্শন করছে তাদের দায়িত্ব চ্যানেলগুলোকে ক্লিনফিড (বিজ্ঞাপন ব্যাতীত) করে পাঠানো। আমরা অনেকদিন ধরেই তাদের এ ব্যাপারে বলছিলাম। কিন্তু তারা টেকনিক্যাল সমস্যা, বিনিয়োগ ইত্যাদি অসুবিধার কথা বলে আসছিল। আনন্দের সংবাদ হচ্ছে যে, আজকে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের টেকনিক্যাল টিম আমাদের দেখিয়েছে সরকার কিংবা প্রদর্শক কেউ যদি চায় তাহলে তারা চ্যানেলগুলোকে ক্লিনফিড (বিজ্ঞাপন ব্যতীত) করে দিতে পারবে। এতে আমাদের দেশের টেলিভিশন চ্যানেলগুলো সর্বোপরি গণমাধ্যম উপকৃত হবে।
ওটিটি প্লাটফর্ম নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ওটিটি প্লাটফর্ম আধুনিক বিশ্বের নতুন বাস্তবতা। বিভিন্ন দেশে ওটিটি চালু হওয়ার পরে নীতিমালা/বিধিমালা চালু হয়েছে, সেখানে কীভাবে এগুলো চলে তা নির্ধারণ করা হয়েছে। তাই আমাদের দেশে ওটিটি প্লাটফর্মকেও নিয়ন্ত্রণ নয় বরং একটি নীতিমালার মধ্যে আনার জন্য সরকার কাজ করছে। ইতোমধ্যে কাজ অনেক এগিয়েছে, আশা করছি আগামী দেড় থেকে দুই মাসের মধ্যে আমরা এ সংক্রান্ত নীতিমালা চূড়ান্ত করতে পারব। এবং এটি থেকে এখন ভ্যাট বা মূল্য সংযোজন কর আদায় হচ্ছে অর্থাৎ ব্যবহারকারীরা ভ্যাট দিচ্ছেন। কিন্তু যারা সার্ভিস প্রোভাইডার তারা ট্যাক্স দিচ্ছে না। এ ব্যাপারে অর্থ মন্ত্রণালয় ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে সঙ্গে নিয়ে আমরা কাজ করছি। আশা করি অচিরেই এ সংক্রান্ত একটি সিদ্ধান্তে আসতে পারব।
এ সময় তথ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের আর্থিক সুরক্ষা নিয়ে আরেক প্রশ্নে বলেন, আমরা গণমাধ্যমকর্মী আইন দ্রুত সংসদে তোলার ব্যবস্থা করছি। আশা করছি এ আইন পাস হলে সংবাদকর্মীদের আর্থিক সুরক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত হবে।